শ্রীনাথ চন্দ (১-৪-১৮৫১ –- ২৩-৭-১৯৩৮) ফুলবাড়ী—টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ। জগন্নাথ। ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষায় দুই টাকা বৃত্তি পেয়ে ময়মনসিংহে হার্ডিঞ্জ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৮৬৬ খ্রী. ৪ টাকা বৃত্তি পেয়ে বাংলা নর্মাল ট্রেনিং স্কুলে ভর্তি হন ও ১৮৬৯ খ্ৰী. নর্মাল স্কুলের শেষ পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। ১৮৬৯ খ্রী. সতীর্থ কৃষ্ণকুমার মিত্ৰ প্ৰমুখের সঙ্গে ব্ৰাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন। ১৮৭০ খ্ৰী. জিলা স্কুলে হেড পণ্ডিতের কাজ নেন এবং বিধবা বোন সারদকে শহরে এনে লেখাপড়া শিখিয়ে বিবাহ দেন (এই সারদার সন্তান ডাঃ বিমলচন্দ্ৰ ঘোষ বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন)। তিনিও ১৮৭৬ খ্রী. বামাসুন্দরী নামে এক বিধবাকে বিবাহ করেন। মেয়েদের লেখাপড়া শেখার ব্যাপারে ও সমাজসংস্কার আন্দোলনে অন্যান্য ব্ৰাহ্ম যুবকদের সঙ্গে প্রধান ভূমিকা নেন। মেয়েদের আবাসিক বিদ্যাময়ী স্কুল ছাড়াও তাদের চেষ্টায় সিটি কলেজিয়েট স্কুল (কলিকাতার শাখা), গরীব ও শ্রমজীবীদের জন্য নাইট স্কুল ও পরবর্তী কালে আনন্দমোহন কলেজ স্থাপিত হয়। বিদ্যাময়ী স্কুলের সঙ্গে বহুদিন জড়িত ছিলেন। ১৮৮০ খ্রী. ‘সঞ্জীবনী পত্রিকা’, ‘ঘোষ লাইব্রেরী’, ‘ময়মনসিংহ সভা’ ও ‘সারস্বত সমিতি’ স্থাপন করেন। তাঁরই চেষ্টায় ও অনুরোধে জমিদার সূৰ্যকান্ত আচার্য শহরের জন্য একটি পানীয় জলের আধার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৯৭ খ্ৰী. প্রবল ভূমিকম্পের পরে রিলিফের কাজকর্ম করেন। ১৯০৫ খ্রী. বঙ্গভঙ্গের ফলে যে স্বদেশী আন্দোলন হয়, অন্যান্য ব্ৰাহ্মদের সঙ্গে তিনিও তাতে যোগ দেন। তবে আনন্দমোহন বসু ও সূর্যকান্তের নেতৃত্বে যে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলন শুরু হয় তা থেকে তাঁরা কিছুটা দূরে ছিলেন। ফলে উগ্ৰ জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে তাদের কিছুটা সংঘর্ষে আসতে হয়। নানান আবর্তের মধ্যে দিয়েও বিদ্যাময়ী স্কুলটির পরিচালনা যাতে ব্যাহত না হয় তাঁর জন্য আপ্ৰাণ চেষ্টা ছিল। তাঁর প্ৰচেষ্টায় স্কুলটি সরকারী বিদ্যালয়ে পরিণত হয়। ১৯০৬ খ্রী. থেকে অসুস্থতাহেতু ও কতকটা রাজনৈতিক কারণে তিনি শিক্ষাজীবন ও পরে কর্মজীবন থেকে অবসর নেন। তাঁর কনিষ্ঠা কন্যা লাবণ্যলতা চন্দ ১৯৩০ খ্ৰী. ব্রিটিশ সরকারের দমন নীতির বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদ জানাবার জন্য অভয় আশ্রমে যোগ দেন ও আইন অমান্য আন্দোলন করে কয়েকবার কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।
পূর্ববর্তী:
« শ্রীধর আচার্য, শ্রীধর ভট্ট
« শ্রীধর আচার্য, শ্রীধর ভট্ট
পরবর্তী:
শ্রীপারাবত »
শ্রীপারাবত »
Leave a Reply