শ্যামাচরণ রায়, রায়বাহাদুর (৬-৭-১৮৪৫ — ৮-১২-১৯৩৫) বনগ্রাম-ময়মনসিংহ। গৌরচরণ দরিদ্র পরিবারে জন্ম হলেও ভাল ছাত্র হওয়ায় বৃত্তি পেয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে সক্ষম হন। ঢাকা কলেজ থেকে এফ.এ. পরীক্ষায় ইতিহাসে বিশেষ পারদর্শিতার জন্য তখনকার সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার ‘ডোনেলী পদক’ লাভ করেন। ইংরেজী ও ইতিহাসে বুৎপত্তির জন্য তাঁর এত খ্যাতি হয় যে অঙ্কে কাঁচা থাকায় বি.এ. পাশ না করলেও সেন্ট গ্রেগরী ইংরেজী হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হন। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় কাজে ইস্তফা দিয়ে পোগোজ স্কুলে প্রথম সহকারী ও পরে প্রধানশিক্ষক হন। ১৮৭২ খ্রী. ওকালতি পাশ করে ময়মনসিংহ কোর্টে যোগ দেন। সুদীর্ঘকাল ময়মনসিংহের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ও পরে সভাপতি ছিলেন। ময়মনসিংহ মিউনিসিপ্যালিটির সহকারী সভাপতি ও সভাপতি হিসাবে ৪০ বছর দায়িত্বভার পালন করেন। তাঁরই প্ৰচেষ্টায় শহরে পরিশোধিত পানীয় জলের কল স্থাপিত হয়। জিলা বোর্ডের সদস্য হিসাবে শিক্ষাবিস্তারে সচেষ্ট ছিলেন। তাঁর উদ্যোগে ও চেষ্টায় ময়মনসিংহে সিটি কলেজিয়েট স্কুল, আনন্দমোহন কলেজ, মেয়েদের বিদ্যাময়ী স্কুল, মেডিক্যাল স্কুল প্রভৃতি স্থাপিত হয়। রাজনীতিক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদী ছিলেন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে মহারাজা সূৰ্যকান্ত আচাৰ্য চৌধুরী, অনাথবন্ধু গুহ প্রভৃতির সঙ্গে তিনিও অগ্রণী ভূমিকা গ্ৰহণ করেন। ১৯১৯ খ্রী. জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ময়মনসিংহবাসীরা নগ্নপদে যে মিছিল বার করে, বৃদ্ধ বয়সেও তিনি তাতে যোগ দেন। ঐ বছরই বঙ্গীয় প্ৰাদেশিক রাষ্ট্রীয় সম্মেলনের অধিবেশনে অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি হন। জামাতা যুগান্তর দলের বিপ্লবী নেতা আনন্দকিশোর মজুমদার, এবং নামকরা খেলোয়াড় ও বিপ্লবী দলের সঙ্গে যুক্ত অশোক রায় তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র।
পূর্ববর্তী:
« শ্যামাচরণ মাইতি
« শ্যামাচরণ মাইতি
পরবর্তী:
শ্যামাচরণ লাহা »
শ্যামাচরণ লাহা »
Leave a Reply