শ্যামাকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, সোইহং স্বামী (১৮৫৮ — ৬-১২-১৯১৮) আড়িয়ল-বিক্রমপুর-ঢাকা। শশিভূষণ। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে থাকতেই কলেজের জিমনেশিয়মে ব্যায়ামচৰ্চায় কাটাতেন। এইসময় ঢাকা লক্ষ্মীবাজারের বিখ্যাত পালোয়ান অধর ঘোষের তত্ত্বাবধানে কুস্তিতে বিশেষ পারদর্শিতা লাভ করেন। ১৮– ২২ বছরের মধ্যে পাঞ্জাবের ভুট্টা সিং, কাদের পালোয়ান, যুক্ত প্রদেশের জয়মল সিং ইত্যাদি বহু পালোয়ানকে পরাস্ত করে খ্যাতিমান হন। এরপর ত্রিপুরার মহারাজের পার্শ্বচররাপে দুই বছর থাকবার পর বরিশাল গভর্নমেন্ট স্কুলের ব্যায়ামশিক্ষক নিযুক্ত হন। ত্রিপুরায় থাকা কালে শিকারে গিয়ে ব্যাঘ্রের কবলে পড়লে তাকে মল্লযুদ্ধে পরাস্ত করে ছোরার সাহায্যে হত্যা করেন। এই ঘটনার পরেই ১২৯৪ বৰ্ণ ফ্রেডকুকের ইংলিশ সার্কাসে হিংস্ৰ জন্তুর খেলা দেখাবার জন্য নিযুক্ত হন। ১২৯৫ ব. নাগাদ একটি সার্কাস দল গঠন করেন। এই দলটি ভূমিকম্পে নষ্ট হলে ‘গ্র্যান্ড শো অফ ওয়াইল্ড অ্যানিমেলস’ নাম দিয়ে আর একটি সার্কাস দল গঠন করেন। তিনি ব্যাঘ্রের মুখের মধ্যে মাথা এবং দেহের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্ৰবেশ করিয়ে খেলা দেখাতেন। বুকের উপর ১২/১৪ মণ ওজনের পাথর ভাঙাতেন। তরুণ সমাজের মধ্যে ব্যায়ামচৰ্চা, আত্মনির্ভরশীলতা, দেশপ্ৰেম জাগ্রত করা এবং দেশকে পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্ত করাই ছিল তাঁর জীবনের ব্ৰত। ৪২ বছর বয়সে স্ত্রী-পুত্ৰ-কন্যা ত্যাগ করে সন্ন্যাসধর্মে দীক্ষিত এবং ‘তিব্বতী বাবা’ নামক জনৈক সন্ন্যাসীর কাছে দীক্ষা নিয়ে ‘সোইহং স্বামী’ নামে পরিচিত হন। এই সময়ে বহু গ্ৰন্থ লেখেন ও নৈনিতালের ৭ মাইল দূরে ভাওয়ালীতে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। রচিত গ্ৰন্থ: ‘সোইহং তত্ত্ব’, ‘সোইহং সংহিতা’, ‘সোইহং গীতা’, ‘বিবেক গাথা’, ‘Truth’, ‘ভগবদগীতার সমালোচনা ‘প্রভৃতি।
পূর্ববর্তী:
« শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী
« শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী
পরবর্তী:
শ্যামাচরণ দাস »
শ্যামাচরণ দাস »
Leave a Reply