শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী (১২-৭-১৮৬৯ –- ৭-৯-১৯৩২) বারেঙ্গ-পাবনা। হরসুন্দর। বিশিষ্ট সাংবাদিক, দেশপ্রেমিক ও বক্তা। প্রবেশিকা পরীক্ষায় বৃত্তি লাভ করেন। পিতৃবিয়োগের ফলে বি.এ. পড়া ছেড়ে পাবনা স্কুলে শিক্ষকের কাজ নেন (১৮৮৯–৯০)। পরে কলিকাতায় এসে অ্যাংলো-ভেদিক স্কুলের শিক্ষক নিযুক্ত হন এবং ‘প্ৰতিবেশী’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। এই পত্রিকাই পরে ‘পিপল অ্যান্ড প্রতিবেশী’ নামে দ্বিভাষিক পত্রিকায় রূপান্তরিত হয়। সাংবাদিকতার সূত্রে তিনি স্বদেশী আন্দোলনে অংশ নিতে আরম্ভ করেন এবং ক্ৰমে অরবিন্দ ঘোষ, বিপিনচন্দ্ৰ পাল প্রমুখ নেতাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সমপর্যায়ের নেতারূপে গণ্য হন। তাঁর নিজের পত্রিকা উঠে গেলে তিনি বিখ্যাত বিপ্লবী পত্রিকা ‘বন্দেমাতরম’ সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯০৮ খ্রী. সহকর্মী ও স্বদেশী দলের আটজনের সঙ্গে। তিনি মান্দালয়ে নির্বাসিত হন। ১৯১০ খ্ৰী. মুক্তিলাভের পর সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বেঙ্গলী’ পত্রিকায় সহকারী সম্পাদকের কাজ করতে থাকেন। ১৯১৭–২০ খ্ৰী. অন্তরীণাবদ্ধ ছিলেন। মুক্তির পর নিজ সম্পাদনায় বিখ্যাত ইংরেজী দৈনিক ‘সার্ভেন্ট’ পত্রিকা প্ৰকাশ করেন। প্রথম জীবনে বিপ্লবী অনুশীলন সমিতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কংগ্রেসের নেতৃত্ব গান্ধীজীর হাতে গেলে তিনি অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন ও ১৯২২ খ্রী. ৬ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করেন। এসময়ে তিনি বঙ্গীয় প্ৰাদেশিক কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। ‘সন্ধ্যা’ পত্রিকার সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল। রচিত গ্ৰন্থ: ‘Through Solitude and Sorrow’, ‘My Mother’s Face’ (মিস মেয়োর ‘মাদার ইণ্ডিয়া’ গ্রন্থের প্রতিবাদ) প্রভৃতি। তিনি জাতিভেদ প্রথার সমর্থক এবং পর্দা আইনের বিরোধী ছিলেন। শেষ-জীবনে তিনি ভারতীয় দর্শন ও বৈষ্ণব সাহিত্যের চর্চায় মনোযোগী হন।
পূর্ববর্তী:
« শ্যামল চক্রবর্তী
« শ্যামল চক্রবর্তী
পরবর্তী:
শ্যামাকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, সোইহং স্বামী »
শ্যামাকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, সোইহং স্বামী »
Leave a Reply