শশীকুমার হেশ (১৮৬৯ — ?) সাজিউড়া–ময়মনসিংহ। প্রতিভাবান তৈলচিত্রশিল্পী। তাঁর বাল্যজীবন চরম অভাব.অনটনের মধ্যে কাটে। বাংলা ছাত্রবৃত্তি পাশ করে নিজ গ্রামের পাঠশালায় পণ্ডিত করতেন এবং সেই সঙ্গে ছবি আঁকতেন। কলিকাতা আর্ট স্কুলে পড়বার জন্য বহু চেষ্টায় ময়মনসিংহ জেলা বোর্ডের স্কলারশিপ সংগ্রহ করেন। আর্ট স্কুল থেকেও অপর একটি বৃত্তি পান। ময়মনসিংহের এক জমিদার-গৃহিণী জাহ্নবী দেবী চৌধুরাণীর পরিবারের প্রতিকৃতি এঁকে তিনি ৬০০ টাকা সংগ্রহ করেন এবং ১৮৯৪ খ্রী. ইটালী যান। ৩ মাসে ইটালীয় ভাষা শিখে। রয়্যাল অ্যাকাডেমিতে প্ৰবেশ করেন। এখানে ৩ বছর পেন্টিং শিখে জার্মানীর মিউনিখ শহরে রয়্যাল অ্যাকাডেমির স্পেশাল পেন্টিং-এ ৬ মাস ক্লাস করেন। এরপর স্বাধীনভাবে জীবিকার উদ্দেশ্যে প্যারিসে যান। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জমিদার সূৰ্যকান্ত আচার্য তাঁর শিক্ষাকালের এই সাড়ে তিন বছরের অধিকাংশ ব্যয় বহন করেন। পাঁচ বছর পর লন্ডনে গেলে সেখানে বিখ্যাত ভারতীয় নেতা ডাবলির.সি.বোনার্জী, দাদাভাই নৌরজী, বিপিনচন্দ্ৰ পাল এবং রমেশচন্দ্র দত্তের চেষ্টায় বিশিষ্ট ব্যক্তিগণের উপস্থিতিতে শিল্পীর সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। কলিকাতায় ফিরে তিনি আচার্য জগদীশচন্দ্রের অতিথি হন। ৬-১২-১৯০০ খ্ৰী. ফরাসী বিদুষী মহিলা আতালি ফ্রামাঁর সঙ্গে ব্ৰাহ্মমতে তাঁর বিবাহ হয়। পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী এই বিবাহে পৌরোহিত্য করেন। পোট্রেট পেন্টাররূপে তিনি এদেশের বহু গুণী ও জ্ঞানীর প্রতিকৃতি অঙ্কন করে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। জ্যোতিরিন্দ্ৰনাথ এই শিল্পীর ছবি এঁকেছিলেন। এদেশে বহু ও বিপুল চিত্রসম্ভারের স্রষ্টা শশীকুমার একসময়ে হঠাৎ সপরিবারে দেশত্যাগ করে ফ্রান্সে যান। সম্ভবত সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
পূর্ববর্তী:
« শশীকুমার তর্কতীর্থ
« শশীকুমার তর্কতীর্থ
পরবর্তী:
শশীচন্দ্ৰ দত্ত »
শশীচন্দ্ৰ দত্ত »
Leave a Reply