সিরাজদ্দৌলা, নবাব (১৭৩০ — ১৭৫৮) মুর্শিদাবাদ। জইনউদ্দীন। নবাব আলীবর্দী খাঁর দৌহিত্র। ১৭৫৬ খ্রী. আলীবর্দী অপুত্ৰক অবস্থায় মারা গেলে সিরাজ মুর্শিদাবাদের মসনদে অধিষ্ঠিত হন। বর্গীর হাঙ্গামার পর থেকে দিল্লীর সম্রাট ক্ষমতাশূন্য হওয়ায় আলীবর্দী দিল্লীতে রাজস্ব প্রেরণ রহিত করেছিলেন। এইসময় বাঙলা প্রায় স্বাধীন হয়ে ওঠে। মসনদে বসার পর থেকে সিরাজ ইংরেজদের নানা কার্যকলাপে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। প্রথমেই তিনি ইংরেজদের কাশিমবাজার কুঠি দখল করে ২০ জুন ১৭৫৬ খ্রী. কলিকাতা অধিকার করেন। পরে জানুয়ারী ১৭৫৭ খ্রী. লর্ড ক্লাইভ কলিকাতা দুৰ্গ পুনরুদ্ধার করে। অতঃপর নবাবের সঙ্গে ইংরেজদের সন্ধি হয় যে, তারা বিনাশুল্কে বাণিজ্য করতে পারবে এবং নবাব তাদের কিছু ক্ষতিপূরণ দেবেন। সন্ধি হলেও নবাব ফরাসীদের সঙ্গে চুক্তি করে ইংরেজদের তাড়াবার ব্যবস্থা করতে লাগলেন। ক্লাইভ এই ব্যাপার জানতে পেরে চন্দননগর অধিকার করেন। এদিকে বিভিন্ন কারণে জগৎশেঠ, মীরজাফর, রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ প্রমুখ রাজপুরুষগণ নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করবার জন্য ক্লাইভের সঙ্গে চক্রান্তে যোগ দিলেন। অতঃপর ২৩-৬-১৭৫৭ খ্রী. পলাশী নামক গ্রামে উভয় পক্ষে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মীরজাফর প্রভৃতির চক্রান্তে নবাব সিরাজদ্দৌল্লা পরাজিত হয়ে পলায়ন করেন। পরে মীরজাফরের অনুচরদের সাহায্যে ধৃত ও নৃশংসভাবে নিহত হন। সিরাজদ্দৌল্লা প্রকৃত অর্থে বাঙলার শেষ স্বাধীন নবাব।
পূর্ববর্তী:
« সিমি গারেওয়াল
« সিমি গারেওয়াল
পরবর্তী:
সিরাজুদ্দীন হোসেন »
সিরাজুদ্দীন হোসেন »
Leave a Reply