সনৎ দত্ত (১৯১৩ — ৩০-১২-১৯৬৮) হবিবপুর–নদীয়া। হাওড়ার বেলিলিয়াস স্কুলে পাঠরত অবস্থায় তিনি সন্ত্রাসবাদী দলের সংস্পর্শে আসেন। ১৯৩০ খ্রী. আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে গ্রেপ্তার হন। হাওড়া জেলায় বিপ্লবী সাম্যবাদী দল গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা। ১৯৩৮ খ্রী. হাওড়ার ‘মোসাট’ কৃষক সম্মেলনে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। তদানীন্তন প্রতিটি কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। শহরাঞ্চলের মজদুর সংগঠনের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল। বার্ন অ্যান্ড কোং-এর মজদুর ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে তিনি ও তাঁর দলের মতবাদ ছিল Turn the imperialist war into civil war’ এবং তারই ভিত্তিতে তিনি কাজে অগ্রসর হন। ১৯৪২-এর আগস্ট বিপ্লবে হাওড়া বেলিলিয়াস রোডের শ্রমিকদের নিয়ে ব্যাটরা থানা আক্রমণ করেন। পুলিসের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং আজাদ হিন্দ বাহিনীর সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে এই অভিযোগে তাকে দিল্লীর লালকেল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিশ্বযুদ্ধ-শেষে ১৯৪৫ খ্রী. তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। ১৯৪৫ খ্রী. গঠিত হাওড়া জেলার মজদুর কৃষক পঞ্চায়েতের সভাপতি ও ‘পঞ্চায়েৎ’ পত্রিকার ম্যানেজার হিসাবে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। ১৯৪৬ খ্রী. সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় নিজের জীবন বিপন্ন করেও হাওড়ার সদর বক্সী লেনের দাঙ্গা রোধ করেছিলেন। ঐ সময়ে বহু মুসলমান পরিবারকে আশ্রয় দিয়ে তাদের জীবন রক্ষা করেন। নোয়াখালী থেকে আগত বিপন্ন উদ্বাস্তুদের জন্য হাওড়ার বিভিন্ন অঞ্চলে রিফিউজী ক্যাম্প সংগঠন করেছিলেন। ১৯৪৯ খ্রী. আরসিপিআই দলের নেতা পান্নালাল দাশগুপ্তের নেতৃত্বে পরিচালিত সশস্ত্র অভ্যুত্থানের তিনি অন্যতম নেতা ছিলেন। এই ঘটনায় ধৃত হয়ে ১৯৬২ খ্রী. পর্যন্ত কারারুদ্ধ থাকেন। কারাবাসকালে পুলিসী অত্যাচার ও অন্যায়ের প্রতিবাদে অনশনের ফলে তার স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে। ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়েও তিনি মজদুর ও কিষাণ আন্দোলনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।
পূর্ববর্তী:
« সনৎ চট্টোপাধ্যায়
« সনৎ চট্টোপাধ্যায়
পরবর্তী:
সনৎকুমার রায়চৌধুরী »
সনৎকুমার রায়চৌধুরী »
Leave a Reply