সত্যেন্দ্ৰনাথ মজুমদার (১৮৯১ — ১৭-১০-১৯৫৪) টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ। মহিমচন্দ্র। যৌবনে তিনি আচার্য ব্ৰজেন্দ্ৰনাথ শীলের সাহচর্য পান। কলিকাতায় এসে কিছুদিন বেলুড় মঠে যাতায়াত করে শ্রীশ্রীমায়ের কাছে দীক্ষালাভ করেন। এই সময় স্বামী সারদানন্দের ইচ্ছায় স্বামী বিবেকানন্দের জীবন-চরিত লেখেন। মহাত্মাজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দিয়ে দেশবন্ধুর সান্নিধ্য লাভ করেন। দেশবন্ধু সম্পাদিত ‘নারায়ণ’ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতায় ব্ৰতী হন। পরে স্বদেশী আন্দোলনের সময়ে সুরেশচন্দ্র মজুমদারের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ১৯২২ খ্রী. ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ প্ৰকাশিত হলে সম্পাদকীয় বিভাগে যোগ দেন। ১৯২৬ খ্রী থেকে ৭-১-১৯৪১ খ্রী. পর্যন্ত ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’র সম্পাদক ছিলেন। এই সময় তিনি নির্ভীক ও তেজস্বী লেখনীর দ্বারা সংবাদপত্র-জগতে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেন। ১৯৩৯ খ্রী. দুই মাসের জন্য সুভাষচন্দ্রের সঙ্গে সমগ্ৰ উত্তর ভারত পরিভ্রমণে যান। স্বাদেশিকতার মূল্যস্বরূপ তিনবার কারাবরণ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাঁর রচিত সম্পাদকীয়, বিশেষ করে রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি সম্পর্কে, জ্ঞানগর্ভ প্ৰবন্ধগুলি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৯৪১ খ্রীষ্টাব্দের পর ‘স্বরাজ’, ‘সত্যযুগ’, ‘অরণি’ প্রভৃতি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। মহাযুদ্ধের সময় গ্রেট ব্রিটেনের গ্লোব সংবাদ-সরবরাহ প্রতিষ্ঠান শাখা অফিস খুললে তিনি তার প্ৰধান সম্পাদক হন। ১৯৫১ খ্রী. রাশিয়া ও ইউরোপ ভ্ৰমণে যান। ‘নন্দীভৃঙ্গী’ ছদ্মনামে তিনি শ্লেষাত্মক ও রসাত্মক রচনাবলী লিখতেন। এই নামে ‘রঙবেরঙ’ রম্যরচনা আনন্দবাজারে ধারাবাহিকভাবে প্ৰকাশিত হত। ‘বিবেকানন্দ চরিত’, ‘স্ট্যালিনের জীবনী’, ‘আমার দেখা রাশিয়া’, ‘স্বৈরিণী’ (উপন্যাস), ‘জওহরলালের আত্মচরিত’ (অনুবাদ) প্রভৃতি তাঁর চরিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।
পূর্ববর্তী:
« সত্যেন্দ্ৰনাথ বসু, বিজ্ঞানাচাৰ্য
« সত্যেন্দ্ৰনাথ বসু, বিজ্ঞানাচাৰ্য
পরবর্তী:
সত্যেন্দ্ৰনাথ সেন »
সত্যেন্দ্ৰনাথ সেন »
Leave a Reply