সত্যেন্দ্ৰনাথ ঠাকুর (১-৬-১৮৪২ — ৯-১-১৯২৩) জোড়াসাঁকো-কলিকাতা। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ। প্ৰথম ভারতীয় সিভিলিয়ান এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের অগ্ৰজ। স্বগৃহে সংস্কৃত ও ইংরেজী শেখেন। মেধাবী ছাত্র হিসাবে হিন্দু স্কুল থেকে ১৮৫৭ খ্রী. এন্ট্রান্স পাশ করে (এই বছরই প্রথম এন্ট্রান্স পরীক্ষা প্রবর্তিত হয়) প্রেসিডেন্সী কলেজে ভর্তি হন। ১৮৫৯ খ্রী. জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর সঙ্গে বিবাহ হয়। কলেজে পড়ার সময় ব্ৰাহ্মসমাজের সংস্পর্শে আসেন। ২৭-৯-১৮৫৯ খ্রী. পিতারসঙ্গে সিংহল ভ্ৰমণে যান। কলিকাতায় ফিরে ব্ৰাহ্মসমাজের নূতন কর্মকর্তা নিযুক্ত হন (২৫-১২-১৮৫৯) ও ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকার সম্পাদনা-ভার গ্রহণ করেন। ২৩-৩-১৮৬২ খ্রী. লন্ডন যান এবং ১৮৬৪ খ্রী. আইসিএস হয়ে স্বদেশে ফেরেন। চাকরির জন্য সস্ত্রীক বোম্বাই যান এবং এপ্রিল ১৮৬৫ খ্রী. আমেদাবাদের অ্যাসিস্ট্যান্ট কালেক্টর ও ম্যাজিষ্ট্রেট হন। ১৮৯৭ খ্ৰী. অবসর নিয়ে কলিকাতায় ফেরেন। ১২৭৩ ব. চৈত্র-সংক্রান্তির দিন (১২০৪-১৮৬৭) দেশের লোককে দেশাত্মবোধে উদ্ধৃদ্ধ করবার জন্য কলিকাতার বেলগাছিয়ায় ‘হিন্দুমেলা’র প্রবর্তন করেন। এই মেলার দ্বিতীয় অধিবেশনে জাতীয় ভাবধারায় ‘মিলে সবে ভারতসন্তান’ গানটি রচনা করেন। স্ত্রী-স্বাধীনতার পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি পত্নী জ্ঞানদানন্দিনীকে বিলাতে নিয়ে পাশ্চাত্য মহিলাদের আদর্শে গড়ে উঠতে উৎসাহিত করেন। জ্ঞানদানন্দিনী গৃহে পর্দাপ্রথা ভাঙতে সক্ষম হয়েছিলেন। গভর্নমেন্ট হাউসে বড়লাটের আমন্ত্রণে তিনিই প্ৰথম ভারতীয় মহিলা উপস্থিত ছিলেন। ১৮৯৭ খ্রী. নাটোরের বঙ্গীয় প্ৰাদেশিক সম্মেলনের ১০ম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। ১৩০৭ ও ১৩০৮ বৰ্ণ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সভাপতি, ১৯০৬ খ্রী. ব্ৰাহ্মসমাজের আচার্য ও ১৯০৭ খ্রী. জ্যেষ্ঠভ্রাতা দ্বিজেন্দ্ৰনাথের সঙ্গে আচার্য ও সভাপতি নির্বাচিত হন। ৯ টি বাংলা ও ৩টি ইংরেজী গ্ৰন্থ ছাড়াও তিনি বহু ব্ৰহ্মসঙ্গীতের রচয়িতা। ‘স্ত্রী স্বাধীনতা’, ‘ভারতবর্ষীয় ইংরাজ’, ‘Raja Rammohan Roy’, ‘সুশীলা ও বীরসিংহ (নাটক), ‘বোম্বাই চিত্র’, ‘বাল্যকথা’, মেঘদূতের অনুবাদ, তিলকের ভগবদগীতার অনুবাদ ও তুকারামের অভঙ্গের অনুবাদ তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ। সুরেন্দ্রনাথ ও ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী তাঁর দুই কৃতী সন্তান।
পূর্ববর্তী:
« সত্যেন্দ্ৰচন্দ্ৰ মিত্র
« সত্যেন্দ্ৰচন্দ্ৰ মিত্র
পরবর্তী:
সত্যেন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় »
সত্যেন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় »
Leave a Reply