সত্যকিঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (১-৯-১৮৯৯ — ১৮-১২-১৯৮০)। বিষ্ণুপুর-বাঁকুড়া। শ্ৰীপতিচরণ। বিষ্ণুপুর ঘরানার অন্যতম সঙ্গীতাচাৰ্য। পিতামহ রামকুমার ছিলেন সঙ্গীতসাধক। পিতামহের কাছে শিক্ষা শুরু। কিন্তু প্ৰকৃত শিক্ষা জ্ঞাতি পিতৃব্য গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। কণ্ঠ ও যন্ত্রসঙ্গীতের দুই ধারাতেই তাঁর প্রতিভার প্রকাশ ঘটে। ১৯২১ খ্রী. কলিকাতায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে আসার আগে। লালগোলা মহারাজার ও পঞ্চকোটের রাজার সভাগায়কের কাজ করেছেন। ১৯১৯ খ্রী. কাশীতে ‘নিখিল ভারত সঙ্গীত সম্মেলন’-এর অধিবেশনে যোগ দিয়ে ধ্রুপদে দ্বিতীয় এবং সেতারে প্রথম স্থান অধিকার করেন। কলিকাতায় এসে ‘সঙ্গীত সম্মিলনী’তে শিক্ষকতা করার সুযোগ পান। কলিকাতার বিশিষ্ট পরিবারে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্ৰতিষ্ঠানে সঙ্গীতশিক্ষক রূপে খ্যাতি অর্জন করেন। এসরাজ, ব্যাঞ্জো, বাঁশী, জলতরঙ্গ, বীণ, সুরবাহার ও পাখোয়াজ বাজাতেও পারদর্শী ছিলেন। মহারাজা প্রদ্যোতকুমার ঠাকুর তাঁকে সঙ্গীতজ্ঞরূপে তাঁর কাছে রাখেন। ব্ৰডকাস্টিং কর্পোরেশনের শুরু থেকে মার্চ ১৯৬২ খ্ৰী. পর্যন্ত বেতারকেন্দ্রের শিল্পী হিসাবে ধ্রুপদ, খেয়াল, টপ্পা ও সেতারের অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। ১৯৭৮ খ্রী. একাডেমী পুরস্কারে সম্মানিত হন। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ সম্পাদিত ‘সংগীত প্ৰকাশিকা’য় তাঁর অনেক স্বরলিপি প্রকাশিত হয়েছে। রচিত গ্ৰন্থ: ‘সঙ্গীত-মুকুর’, ‘সঙ্গীতজ্ঞান প্রবেশ’, ‘রাগ-অভিজ্ঞান’, ‘বাংলাভাষায় উচ্চাঙ্গ খেয়াল’, ‘সুরের পথে একটি জীবন’, ‘সঙ্গীত ও কবিতা শত’, ‘বিষ্ণুপুর ঘরাণার প্রকৃত ইতিহাস ও রাগরূপের সঠিক পরিচয়’ প্রভৃতি।
পূর্ববর্তী:
« সত্যকিঙ্কর গোস্বামী
« সত্যকিঙ্কর গোস্বামী
Leave a Reply