সতীশচন্দ্র রায় ১ (১-৭-১২৭৩ –- ৫-২-১৩৩৮ ব. ) ধামগড়-ঢাকা। জমিদারবংশে জন্ম। কলিকাতা সংস্কৃত কলেজ থেকে প্রথম স্থান অধিকার করে এম.এ. পাশ করবার পর ঢাকা জগন্নাথ কলেজে অধ্যাপনা করেন। পরে অধ্যাপনা ত্যাগ করে সাহিত্যসাধনায় ব্ৰতী হন। ১০টি গ্রন্থ ও প্রায় ৪০টি গবেষণামূলক প্রবন্ধের তিনি রচয়িতা। এরমধ্যে ৬/৭টি প্ৰবন্ধ হিন্দীতে রচিত। তাঁর সম্পাদিত ‘পদকল্পতরু’ গ্ৰন্থ স্মরণীয়। তাঁর ‘অপ্ৰকাশিত পদব্রত্নাবলী’ গ্ৰন্থটিও প্রাচীন বঙ্গ সাহিত্যের একটি প্রামাণ্য গ্ৰন্থ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুরোধে তিনি ভবানন্দ-রচিত ‘হরিবংশ’ নামক প্ৰাচীন কাব্য সম্পাদনা করেন। সম্পাদিত অন্যান্য গ্ৰন্থ: ‘নায়িকা রত্নমালা’ ও ‘গোপালচরিতম’। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতি ছিলেন। সঙ্গীতশাস্ত্রেও তিনি পারদর্শী ছিলেন। মৃদঙ্গ ও তবলা-বাদক হিসাবেও খ্যাতি ছিল।
সতীশচন্দ্র রায় ২ (১৮৮২ — ১৯০৪)। আদি নিবাস উজিরপুর-বরিশাল। বি.এ. পড়ার সময় রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্য লাভ করেন এবং পড়া শেষ হবার আগেই শান্তিনিকেতন ব্ৰহ্মবিদ্যালয়ে অধ্যাপনার কাজে যোগদান করেন। সাহিত্য-রসিক সতীশচন্দ্ৰ গদ্য ও পদ্য রচনায় তাঁর অপূর্ব প্রতিভার পরিচয় রেখে গেছেন। দ্বিজেন্দ্ৰনাথের ‘স্বপ্ন প্ৰয়াণ’-এর এবং কবিগুরুর ‘ক্ষণিকা’র ওপর তিনি যে নিবন্ধ লিখেছিলেন সমালোচনা-সাহিত্যে তা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের উক্তি: ‘সতীশ বঙ্গসাহিত্যে যে প্ৰদীপটি জ্বালাইয়া যাইতে পারিল না। তাহা জ্বলিলে নিভিত না’। তাঁর রচিত গদ্য ও পদ্য সংগ্ৰহ ১৯১২ খ্রী. ‘সতীশচন্দ্রের রচনাবলী’ নামে প্ৰকাশিত হয়।
সতীশচন্দ্র রায় ৩ (২৪-৫-১৮৮৮ – ১৭-৪-১৯৬০) শ্ৰীহট্ট। শিক্ষাবিদ ও সাধক। আসামের প্রথম বাঙালী ডিপিআই (১৯৪০–৪৩)। ১৯০৬ খ্রী. কলিকাতা হেয়ার স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম হন। প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে দর্শনশাস্ত্ৰে প্ৰথম শ্রেণীর অনার্স নিয়ে ১৯১০ খ্রী. বি.এ. ও ১৯১৪ খ্রী. লন্ডন থেকে এম.এ. পাশ করেন। মেধাবী ছাত্র হিসাবে দেশে ও বিদেশে অনেক পুরস্কার ও বৃত্তি পেয়েছেন। লাহোর, ঢাকা, কলিকাতা (সিটি কলেজ), শ্ৰীহট্ট, গৌহাটি প্রভৃতি স্থানের কলেজে শিক্ষকতা করেন। রচিত গ্ৰন্থ: ‘Religion of Modern India’, ‘Training in Leadership & Citizenship for Young India’, ‘Bhagabat Gita & its Background’, ‘উপনিষদের মর্মবাণী’, ‘জীবনবীণার বিচিত্র সুর’, ‘উৎসবের প্রণতি’, ‘ছেলেমেয়েদের প্রার্থনা’ প্রভৃতি। শেষ-জীবনে সাধক হন, নাম হয় হরিদাস নামানন্দ। বৃন্দাবন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও উপাচার্য ছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« সতীশচন্দ্র দেব
« সতীশচন্দ্র দেব
পরবর্তী:
সতীশচন্দ্র রায়চৌধুরী »
সতীশচন্দ্র রায়চৌধুরী »
Leave a Reply