সতীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৬-৩-১৮৭৩ -– ২২-৬-১৯৩৮) বাহেরক-ঢাকা। স্বগ্রামের বিদ্যালয় থেকে বৃত্তিসহ প্রবেশিকা পাশ করে কলিকাতা ডাফ কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকে অনার্স সহ বি.এ. পাশ করে ডাফ কলেজে ও টাঙ্গাইল কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯০১ খ্রী. ব্ৰজমোহন কলেজে (বরিশাল) যোগ দেন। এখানে মহাত্মা অশ্বিনীকুমারের সংস্পর্শে এসে মানবসেবায় উদ্ধৃদ্ধ হন। অশ্বিনীকুমার-প্রতিষ্ঠিত ‘বরিশাল স্বদেশ বান্ধব সমিতি’র সম্পাদকরূপে তাকে একটি বিরাট প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন। সারা জেলায় এর ১৫৯টি শাখা বিস্তৃত হয়। ১৯০৬ খ্রী. বরিশালে প্রাদেশিক রাষ্ট্ৰীয় সম্মেলনের সংগঠনে তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। এবছর বরিশালে দুর্ভিক্ষের সময় এই প্রতিষ্ঠান অভূতপূর্ব সেবাকাজ করে যে বিপুল খ্যাতি অর্জন করে তাঁর মূলে ছিল অশ্বিনীকুমারের প্রেরণা ও সতীশচন্দ্রের সংগঠন-প্রতিভা। অশ্বিনীকুমার তাঁর দুই সহকারী সতীশচন্দ্র ও ছোট সতীশকে নিয়ে বঙ্গভঙ্গ ও স্বদেশী আন্দোলনে বরিশালে এক বিপুল আলোড়ন তুলেছিলেন। পরবর্তী জীবনে ছোট সতীশ (স্বামী প্ৰজ্ঞানানন্দ সরস্বতী) বিপ্লবী নেতারূপে খ্যাতিমান হন। ১৯০৮ খ্রী. ব্রিটিশ সরকার জাতীয় আন্দোলনরোধে ১৮১৮ খ্রী. ষ্টাব্দের ৩নং রেগুলেশন-আইনে সর্বপ্রথম বিনা-বিচারে যে ৯ জনকে বন্দী করে, সতীশচন্দ্ৰ তাঁদের অন্যতম। ফেব্রুয়ারী ১৯১০ খ্রী. মুক্তিলাভের পর ব্ৰজমোহন কলেজে যোগ দিলেও সরকারী চাপে তাকে অপর ৬ জনের সঙ্গে এ প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করতে হয়। তারপর কলিকাতায় সুরেন্দ্রনাথের আহ্বানে প্ৰথমে রিপন কলেজে ও পরে সিটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯২৪ খ্রী. ব্ৰজমোহন কলেজের অধ্যক্ষরূপে ফিরে আসেন এবং আমৃত্যু এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯১১ খ্ৰী. তিনি ব্ৰাহ্মধর্ম গ্ৰহণ করেন। পরে বৈষ্ণব দর্শনে বিশ্বাসী হন। প্ৰধানত শিক্ষাব্ৰতী হলেও জাতীয় আন্দোলনে প্রয়োজন হলেই যোগ দিয়েছেন। স্বাস্থ্যভঙ্গের কারণে তিনি রাচিতে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
পূর্ববর্তী:
« সতীশচন্দ্র ঘোষ
« সতীশচন্দ্র ঘোষ
পরবর্তী:
সতীশচন্দ্র দেব »
সতীশচন্দ্র দেব »
Leave a Reply