শিবরাম চক্রবর্তী (১৩-১২-১৯০৩ –- ২৮-৮-১৯৮০) পৈতৃক নিবাস—জরুরবাকলা-মুর্শিদাবাদ। জন্ম কলিকাতায় মাতুলালয়ে। প্রথমে পাহাড়পুরে পরে কৈশোর অতিবাহিত হয় মালদহের চাচলে। পিতা শিবপ্রসাদ আধ্যাত্মিক স্বভাবের ঘর-পালানো মানুষ ছিলেন। কথার পিঠে কথা চাপিয়ে ‘পান’ (Pun) করায় সিদ্ধহস্ত প্ৰখ্যাত সাহিত্যিক শিবরামের মধ্যে তাঁর পিতার স্বভাব অনেকখানিই বর্তেছিল। চাঁচল রাজবাড়ির লোক ছিলেন। তবে অল্পবয়সেই তিনি বাড়ির বন্ধন ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন থাকা খাওয়ার কোনো চিন্তা না করেই। ‘বাড়ী থেকে পালিয়ে’ তাঁর একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। স্কুলের ছাত্রাবস্থায় স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত হয়ে জেল খেটেছেন। স্বদেশী কাগজ মাথায় করে ফেরি করেছেন। স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। রাজনীতির উপর তাঁর লেখা গ্ৰন্থ ‘মস্কো বনাম পণ্ডিচেরী’। সাংবাদিকতা করেছেন। ‘বিজলী’ ও ‘ফরওয়ার্ড’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ‘যুগান্তর’ নাম দিয়ে একটি পত্রিকাও চালিয়েছেন। লিখেছেন অম্লমধুর টিকাটিপ্পনীর ‘ফিচার’। বসুমতীতে ‘বাঁকা চোখে’, রবিবাসরীয় আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘অল্পবিস্তর’, ‘বিসংবাদ’ এবং দেশ পত্রিকায় ‘আপনি কি হারাইতেছেন আপনি জানেন না’ উল্লেখযোগ্য। প্রথম সাহিত্য-জীবনের শুরু কবি হিসাবে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ মানুষ’। শিশু-সাহিত্যিক হিসাবেই সমধিক প্ৰসিদ্ধ। তাঁর সৃষ্ট ‘হর্ষবর্ধন-গোবর্ধন’ দুই ভাই ও ‘বিনি’ চরিত্র বিশেষ স্মরণীয়। তাঁর গল্পে আছে হাসির ঘটনা, হাসির কথা। ‘শিব্রাম চকরবতি’-র মত নিজেকে নিয়ে ঠাট্টা বাংলা সাহিত্যে বিরল। অকৃতদার এই সাহিত্যিক ১৩৪নং মুক্তারামবাবু স্ট্রীটের মেসবাড়িতে— ‘মুক্তারামের তক্তারামে শুক্তোরাম খেয়ে’ আমৃত্যু ৬০ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। প্ৰায় দেড়শ খানা বই লিখেছেন। শরৎচন্দ্রের দেনাপাওনা উপন্যাসের নাট্যরূপ ‘ষোড়শী’ তাঁরই দেওয়া। ‘যখন তারা কথা বলবে’ তাঁর উল্লেখযোগ্য নাটক। তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্ৰন্থ ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা’।
পূর্ববর্তী:
« শিবরাম চক্রবর্তী
« শিবরাম চক্রবর্তী
পরবর্তী:
শিবরাম মাঝি »
শিবরাম মাঝি »
Leave a Reply