শরচ্চন্দ্ৰ দাশ, রায়বাহাদুর (১৮-৭-১৮৪৯ –- ৫-১-১৯১৭) আলমপুর-চট্টগ্রাম। দীনদয়াল ওরফে মাগনদাস। প্ৰখ্যাত পরিব্রাজক, আবিষ্কারক এবং তিব্বতীয় গবেষণা বা ‘ভোটবিদ্যা’র ক্ষেত্রে একজন পথিকৃৎ। কলিকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে শিক্ষালাভ করেন। ১৮৭৪ খ্রী. দাৰ্জিলিং ভুটিয়া বোর্ডিং স্কুলের প্রধান শিক্ষক হন এবং এখানেই তিব্বতী ভাষা শেখেন। ১৮৭৯ খ্রী. এবং ১৮৮১ খ্রী. তিব্বতের রাজধানী লাসায় যান। প্ৰথমবার যখন তিব্বতে যান। সে সময়ে তিব্বতে বিদেশী লোকের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ ছিল। তাই সেখানকার প্রাচীন পুথিপত্র এবং ধর্ম ও পৌরাণিক তথ্যাদি সংগ্রহের জন্য অতি সন্তর্পণে বিপজ্জনক পথে তাকে যেতে হয়েছিল। দ্বিতীয়বার লাসায় তিনি ত্ৰয়োদশ দালাই লামার দর্শনলাভে সমর্থ হন। তিব্বতী ভাষা ও বৌদ্ধধর্ম সম্বন্ধে তাঁর গভীর জ্ঞানের পরিচয় পেয়ে লামারা তাকে ‘পুণ্ডিবলা’ অর্থাৎ পণ্ডিত মশাই বলে সম্বোধন করতেন। তিববত ভ্ৰমণকালে তিনি হিমালয়, গিরিশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার ও তিব্বতের বহু অজানা ভৌগোলিক তথ্য সংগ্রহ করেন এবং বহু পুথিপত্র নিয়ে দেশে ফেরেন। ১৮৮৪ খ্রী. বাঙলা সরকারের অন্যতম সেক্রেটারী মেকলে সাহেবের সঙ্গে সিকিম, ১৮৮৫ খ্রী. চীনের পিকিং ও ১৯১৫ খ্রী. জাপান ভ্ৰমণে যান। চীনে বেশীর ভাগ সময় চীনা লামাদের পোশাকে লামাদের বৌদ্ধমঠেই কাটিয়েছেন। সেজন্য লামারা তাকে ‘কাচেন-লামা’ বা ‘কাশ্মীর-লামা’ অর্থাৎ কাশ্মীর হইতে আগত লামা আখ্যা দিয়েছিল। ১৮৮৭ খ্রী. বৌদ্ধধর্ম অধ্যয়নের জন্য তিনি শ্যাম দেশে যান এবং সেখানকার রাজা তাঁর পাণ্ডিত্যে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে ‘তুষিতমত’ পদক উপহার দেন। ১৮৮১–১৯০০ খ্রী. পর্যন্ত বাঙলা সরকারের তিব্বতী ভাষার অনুবাদক ছিলেন। ১৮৯২ খ্রী. ‘Buddhist Text Society’ স্থাপন করেন। ১৯০২ খ্রী. ‘Tibetan-English Dictionary’ গ্রন্থ রচনা শেষ করেন। ১৮৯৯ খ্রী. লন্ডনের ‘রয়েল জিওগ্র্যাফিক্যাল সোসাইটি’ তাঁর রচিত ‘তিব্বত ভ্ৰমণ বৃত্তান্ত’ গ্ৰন্থ প্রকাশ করেন ও ঐ সোসাইটি কর্তৃক পুরস্কৃত হন। তাঁর রচিত অন্যান্য গ্ৰন্থ : ‘Journey to Lhasa and, Central Tibet’, ‘Indian Pandits in the Land of Snow’, ‘বোধিসত্ত্বাবদান কল্পলতা’ প্রভৃতি।
পূর্ববর্তী:
« শম্ভুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
« শম্ভুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
পরবর্তী:
শরচ্চন্দ্ৰ দেব »
শরচ্চন্দ্ৰ দেব »
Leave a Reply