শচীন বসু ১ (? –- ২৮-১০-১৩৪৭ ব.) স্বদেশী আন্দোলন-কালের ছাত্রনেতা। রিপন কলেজের ৪র্থ বার্ষিক শ্রেণীর ছাত্র শচীন বন্দেমাতরম সম্প্রদায়ের অন্যতম প্ৰতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৯০৮ খ্রী. তিনি ৩নং রেগুলেশন আইনে রাওয়ালপিণ্ডি জেলে আটক হন। অ্যান্টি-সার্ক্সলার সোসাইটি স্থাপন-কালে কৃষ্ণকুমার মিত্র তাঁর সভাপতি এবং তিনি তার সম্পাদক ছিলেন। ‘ব্যবসা ও বাণিজ্য’ পত্রিকার সম্পাদক থাকা কালে তাঁর মৃত্যু হয়।
শচীন বসু ২ (খোকা বসু) (১৯১২ — ১৯৫৫) মৌভোগ–খুলনা। স্কুলের ছাত্রাবস্থায়ই যশোহর-খুলনা যুবসঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৩০ খ্রী. কংগ্রেসের লবণ-আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দেন। পরে মার্ক্সবাদী চিন্তাধারায় আকৃষ্ট হয়ে গ্রামে গ্রামে কৃষক আন্দোলন সংগঠনে সক্রিয় হন। ১৯৩৩ খ্রী. কমিউনিস্ট পার্টির সভ্যপদ লাভ করেন। বাঙলা দেশে পার্টির প্রথম ২০ জন সভ্যোর মধ্যে তিনি অন্যতম। প্রেসিডেন্সী বিভাগে কৃষক সংগঠন গড়ে তোলার দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর। ১৯৩৬ খ্রী. খুলনা জেলা কৃষক সম্মেলন মৌভোগ গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। তাঁর নেতৃত্বে মৌভোগের পাশে বড়জেলা খাল কাটার আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৪২–৪৩ খ্রী. বাঙলার দুর্ভিক্ষে রিলিফের কাজ এবং সেই সঙ্গে খাল কাটার কাজে অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতার পরিচয় দেন। নিরক্ষার চাষীদের অক্ষর জ্ঞান ও মার্ক্সবাদী শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে সচেষ্ট ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে ১৯৪৬ খ্রী. মৌভোগে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক কৃষক সম্মেলনে ‘তেভাগা চাই’ আন্দোলনের যে আওয়াজ ওঠে, তিনি তাকে তাঁর অঞ্চলে সার্থক রূপ দান করেন। দেশ-বিভাগের পর পূর্ব-পাকিস্তানে থেকে যান এবং পার্টি বেআইনী হওয়ায় আত্মগোপন করে ছিন্নবিচ্ছিন্ন কৃষক আন্দোলনকে গড়ে তুলতে সক্রিয় হন। দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য পার্টির নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গে আসেন। এখানেই মারা যান।
পূর্ববর্তী:
« শচীন দেববর্মন
« শচীন দেববর্মন
পরবর্তী:
শচীন মিত্র »
শচীন মিত্র »
Leave a Reply