শঙ্করানন্দ স্বামী (তারিণীশঙ্কর দাস) (২৬-১২-১৮৯৮ — ১৭-৭-১৯৭৮) শ্ৰীহট্ট। প্রাগৈতিহাসিক মহেঞ্জোদাড়ো সভ্যতার সঙ্গে দেশবাসীর পরিচয় সাধনে যাঁরা অগ্ৰণী হয়েছিলেন তিনি তাদের অন্যতম। শ্ৰীহট্টে চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়নের সময় ১৯২১ খ্রী. অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯২৩ খ্রী. কলিকাতায় স্বামী অভেদানন্দের সংস্পর্শে আসেন ও তাঁর কাছে দীক্ষা নেন। এ সময় স্বামী অভেদানন্দ ‘শ্রীরামকৃষ্ণ বেদান্ত সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করলে তিনি সেই আশ্রমে যোগ দিয়ে শ্ৰীহট্টে আশ্রমের কাজে ১৯৩৯ খ্ৰী. পর্যন্ত ব্যাপৃত থাকেন। পরে কলিকাতায় ফিরে এসে বেদান্ত মঠের মুখপত্র ‘বিশ্ববাণী’ পুনঃপ্রকাশ করেন। এই সময়ে কিছুদিন বেদান্ত সোসাইটির সম্পাদকও ছিলেন এবং সোসাইটির অন্যতম ট্রাস্টি মনোনীত হন। তাঁর আগ্রহে ও উৎসাহে মঠের শিষ্যমণ্ডলী নিয়ে প্রথম এক সম্মেলনের অনুষ্ঠান হয়। ইতিমধ্যেই তাঁর গবেষণার খ্যাতি প্রচারিত হওয়ায় মাসিক ১০০ টাকা বৃত্তি লাভ করে শান্তিনিকেতনে গবেষণা করার সুযোগ পান। ১৯৪৩ খ্রী. তাঁর গবেষণা গ্ৰন্থ ‘The Rik Vedic Culture of Pre-historic indus’ প্রকাশিত হয়। তান্ত্রিক একাক্ষর বীজমন্ত্রের সহায়তায় তিনি মহেঞ্জোদাড়ো লিপি পাঠে সমর্থ হন বলে মনে করেন। তাঁর এই অভিনব সূত্র বিদ্বৎসমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করে। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালির অধ্যাপক ড. বেণীমাধব বড়ুয়া তাঁর সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি সমর্থন করলেও পণ্ডিতমহলের বেশীরভাগই তাঁর মত মেনে নিতে পারেন নি। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনা : ‘Dictionary of Indian Hieroglyphs’, The Indus People Speak’, ‘The Last Days of Mohenjodaro’, ‘Western Buddhism or Christianity’, ‘শ্রীরামকৃষ্ণপচরিত’, ‘স্বামী অভেদানন্দ মহারাজের জীবনী’, ‘মনসাচরিত’, ‘নব বৃহত্তর ভারতের জন্ম’, ‘স্বামী বিবেকানন্দ ও ভারতীয় সভ্যতার বিবরণ’, ‘বঙ্গে মহেঞ্জোদাড়ো সভ্যতার বিস্তার’ প্রভৃতি।
পূর্ববর্তী:
« শঙ্করানন্দ ব্ৰহ্মচারী
« শঙ্করানন্দ ব্ৰহ্মচারী
পরবর্তী:
শচীদুলাল দাশগুপ্ত »
শচীদুলাল দাশগুপ্ত »
Leave a Reply