লীলা রায় (২-১০-১৯০০ -– ১১-৬-১৯৭০) পাঁচগাঁও-শ্ৰীহট্ট। গিরিশচন্দ্ৰ নাগ। ১৯২১ খ্রী. মহিলাদের মধ্যে প্ৰথম স্থান অধিকার করে পদ্মাবতী স্বর্ণপদকসহ কলিকাতা বেথুন কলেজ থেকে বি.এ. এবং ১৯২৩ খ্রী. ইংরেজী সাহিত্যে প্ৰথম শ্রেণীতে প্ৰথম হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাশ করেন। ১৯২১ খ্ৰী. নিখিলবঙ্গ নারী ভোটাধিকার সমিতি ও ১৯২২ খ্রী. ঢাকায় উত্তরবঙ্গ বন্যাত্ৰাণ কমিটির সহ-সম্পাদিকা নিযুক্ত হন। ডিসেম্বর ১৯২৩ খ্রী. মহিলাদের কল্যাণের জন্য ১২ জন সহকর্মী নিয়ে ‘দীপালী সঙ্ঘ’ গঠন করেন। তারপর দীপালী সঙেঘর উদ্যোগে পরিকল্পনা মত আরও কতকগুলি উচ্চ ও প্ৰাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৫ খ্রী. অনিল রায়ের ‘শ্ৰীসঙ্ঘ’ বিপ্লবী দলে যোগ দেন। ১৯২৬ খ্রী. ‘দীপালী ছাত্রী সঙ্ঘ’ নামে ছাত্রী সংগঠন (ভারতে প্ৰথম) করে তাঁর মাধ্যমে ছাত্রীদের মধ্যে রাজনীতি চর্চা শুরু করেন। ১৯৩০ খ্রী. মহিলাদের আবাস ছাত্রীভবন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৮ খ্রী. কংগ্রেসের কলিকাতা অধিবেশনের সময় তাঁর উপর নারী আন্দোলনের ইতিহাস রচনার দায়িত্ব অপিত হয়। ১৯৩১ খ্রী. ‘জয়শ্ৰী’ নামে মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ২০-১২-১৯৩১ খ্ৰী. পুলিস তাকে বেঙ্গল অর্ডিন্যান্সে গ্রেপ্তার করে ১৯৩৮ খ্রী. পর্যন্ত আটক রাখে। মুক্ত হয়ে নেতাজীর জাতীয় পরিকল্পনা কমিটির মহিলা সাব-কমিটির সদস্য হন। ১৩০৫-১৯৩৯ খ্রী. অনিল রায়ের সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ গঠিত হলে তিনি এই সংগঠনে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৪০ খ্রী. ‘হলওয়েল মনুমেন্ট’ অপসারণ আন্দোলনে কারারুদ্ধ হন। কারামুক্তির পর সুভাষচন্দ্রের নির্দেশে ফরওয়ার্ড ব্লক সাপ্তাহিকের সম্পাদনার ভার নেন। ১৯৪১ খ্রী. নেতাজীর অন্তর্ধানের পর অনিল রায় এবং তিনি উত্তর ভারতে ফরোয়ার্ড ব্লক সংগঠনের দায়িত্ব নেন। মার্চ ১৯৪২ খ্রী. পুনর্বার গ্রেপ্তার হন। নোয়াখালির দাঙ্গার পর দুৰ্গতদের ত্রাণকার্যে বিশিষ্ট ভূমিকা গ্ৰহণ করেন এবং ‘ন্যাশনাল সার্ভিস ইন্সটিটিউট’ নামে সেবাদল গঠন করে শান্তি ও সেবার কাজে নিযুক্ত থাকেন। দেশবিভাগের বিরোধিতা করে তিনি এবং অনিল রায় ঢাকাতেই থাকেন, কিন্তু দলের সংগঠনের দায়িত্ব পড়ায় ভারতে এসে উদ্বাস্তুদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। বাঙলার অন্যতম প্রতিনিধিরূপে ভারতীয় গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে ভারতীয় সংবিধান রচনায় অংশ নেন এবং প্রজা সোস্যালিস্ট দলের সভানেত্রীরূপে দেশের সেবা করেন। মৃত্যুর আগে ২৯ মাস সংজ্ঞাহীন হয়ে হাসপাতালে ছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« লীলা মজুমদার
« লীলা মজুমদার
পরবর্তী:
লীলাবজ্র »
লীলাবজ্র »
Leave a Reply