লাডলিমোহন মিত্র (১৮৮৭ – ১৯৪৭) মধ্যকুল-যশোহর। ললিতমোহন। খ্যাতনামা অধ্যাপক। ছাত্র-জীবনে বিপ্লবীদের সংস্পর্শে এসে অনুশীলন সমিতির সভ্য হন। পুলিনবিহারী দাসের নির্দেশ অনুসারে তিনি কলিকাতা ও অন্যান্য স্থানে সমিতির শাখা খোলার কাজে সচেষ্ট ছিলেন। ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলায় ৭-৮-১৯১১ তারিখ ধরা পড়ে দু’বছর সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করেন। বাঘা যতীনের অনুগামী ছিলেন। ১৯১৫ খ্রী. গার্ডেনারীচা ডাকাতির মামলায় নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য (এম. এন. রায়) ধরা পড়লে পুলিস হাজত থেকে কোর্টে নিয়ে যাবার সময় তাকে ছিনিয়ে আনার দায়িত্ব বাঘা যতীন যাঁদের উপর দিয়েছিলেন তিনি তার অন্যতম ছিলেন। নানা কারণে এই উদ্দেশ্য কার্যকরী হয়নি। পরে এমএস-সি পাশ করে ১৯১৬ খ্রী. বঙ্গবাসী কলেজে কেমিষ্ট্রির অধ্যাপক কালিদাস মল্লিকের সহকারী হিসাবে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯৩২ খ্রী. অধ্যাপক মল্লিকের মৃত্যুর পর তিনি ঐ বিভাগের প্রধান নিযুক্ত হন। তাঁর শিক্ষাদানের খ্যাতির জন্য অন্যান্য কলেজের ছাত্ররাও তাঁর ক্লাসে এসে যোগ দিত। রসায়নশাস্ত্ৰ-সম্পর্কে তাঁর রচিত গ্ৰন্থ বঙ্গদেশে ও বঙ্গের বাইরে বহুল প্রচারলাভ করে। তাঁরই একান্ত উৎসাহ ও চেষ্টায় ১৯৪৫ খ্রী. কলেজে নৈশ বি.এস.সি. ক্লাস খোলা হয়। এই ব্যবস্থায় যেসব শিক্ষার্থী দিনের কলেজে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল তারা বিশেষভাবে উপকৃত হয়। দেশ-বিভাগের পর পাকিস্তান থেকে আগত ছাত্রসংখ্যা অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে কলেজে পৃথক প্ৰাতঃকালীন আইএস-সি, বিভাগ ও নৈশ বি.এ. ক্লাস খোলার ব্যাপারেও তাঁর ভূমিকা স্মরণীয়। ১৯১৯ খ্রী. গঠিত কলেজ ইউনিয়নের প্রথম যুগ্ম-সম্পাদক, কলেজ স্পোর্টিং ক্লাবের সহ-সভাপতি এবং কলেজ ফাইন আর্টস সোসাইটির ডিরেক্টর ছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« লাকি আখন্দ
« লাকি আখন্দ
পরবর্তী:
লাবণ্যকুমার গাঙ্গুলী »
লাবণ্যকুমার গাঙ্গুলী »
Leave a Reply