রামেন্দ্রসুন্দর ত্ৰিবেদী (২০-৮-১৮৬৪ -– ৬-৬-১৯১৯) জেমোকান্দি-মুর্শিদাবাদ। গোবিন্দসুন্দর। কান্দি ইংরেজী স্কুল থেকে ১৮৮১ খ্রী. এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে বৃত্তি পান। ১৮৮৬ খ্রী. প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে বি.এ. পরীক্ষায় বিজ্ঞানে অনার্সসহ প্ৰথম স্থান, ১৮৮৭ খ্রী. এম.এ. পরীক্ষায় বিজ্ঞানশাস্ত্ৰে সুবর্ণপদক ও পুরস্কারসহ প্ৰথম স্থান এবং ১৮৮৮ খ্রী. পদার্থবিদ্যা ও রসায়নশাস্ত্ৰে প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন। পরবর্তী দুই বছর প্রেসিডেন্সী কলেজ লেবরেটরীতে বিনা বেতনে বিদ্যাচর্চা করেন। ১৮৯২ খ্রী. রিপন কলেজে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নশাস্ত্রের অধ্যাপক ও শেষে স্থায়ী অধ্যক্ষ হন। ১২৯১ বা ‘নবজীবন’ পত্রিকায় ‘মহাশক্তি’ নামে প্ৰবন্ধ রচনার মাধ্যমে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। পরবর্তী কালে ‘সাধনা’, ‘ভারতী’ প্রভৃতি পত্রপত্রিকায়ও লিখতেন। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ছিল তাঁর প্রধান কর্মক্ষেত্র। বাংলা সাহিত্যজগতে ‘সাহিত্য পরিষদে’র গুরুত্বের মূলে তাঁর কর্মপ্ৰচেষ্টা ও আত্মত্যাগ স্মরণীয়। বিভিন্ন সময়ে পরিষদের বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত থেকে পরিষদের উন্নতিসাধন করেন। ১৩২০ ব. কলিকাতা টাউন হলে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গীয়-সাহিত্য-সম্মিলনে’র সপ্তম অধিবেশনে বিজ্ঞান শাখার সভাপতি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেশকরূপে বাংলায় প্ৰবন্ধ পাঠ করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় অনুমতি না দেওয়ায় প্ৰবন্ধ-পাঠ প্ৰত্যাখ্যান করেন। শেষে ভাইস-চ্যান্সেলর স্যার দেবপ্রসাদ সর্বাধিকারী তাকে বাংলায় প্রবন্ধ পাঠের অনুমতি দেন। জাতিভেদপ্রথা-বিরোধী এবং উগ্ৰ স্বদেশপ্ৰেমী ছিলেন। লর্ড কার্জনের আদেশে বঙ্গভঙ্গের ঘটনার প্রতিবাদে তিনি ‘বঙ্গলক্ষ্মীর ব্ৰতকথা’ গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থেরই শেষাংশে রবীন্দ্রনাথের ‘বাংলার মাটি বাংলার জল–’ গানটি উদ্ধৃত আছে। ১৯০৫ খ্ৰী. বঙ্গভঙ্গ উপলক্ষে তাঁর প্ৰস্তাবে বাঙলাদেশে অরন্ধন পালিত হয়। তাঁর রচিত ও প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৪ টির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘প্রকৃতি’, ‘জিজ্ঞাসা’, ‘কর্মকথা’, ‘বিচিত্র-প্রসঙ্গ’, ‘নানাকথা’ ও ‘জগৎ-কথা’। তাঁর বেদচর্চার ফল ঐতরেয় ব্ৰাহ্মণের অনুবাদ এবং যজ্ঞকথা গ্ৰন্থ। এছাড়াও কয়েকটি পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন। তাঁর মধ্যে ‘Aids to Natural Philosophy’ বিখ্যাত। অপ্রকাশিত রচনাবলীর সংখ্যাও প্রচুর।
পূর্ববর্তী:
« রামেন্দু মজুমদার
« রামেন্দু মজুমদার
পরবর্তী:
রামেশ্বর চক্রবর্তী, ভট্টাচাৰ্য »
রামেশ্বর চক্রবর্তী, ভট্টাচাৰ্য »
Leave a Reply