রামকুমার বিদ্যারত্ন (১৮৩৬ –- ১৬-১২-১৯০১) সামন্তসার-ইদিলপুর-ফরিদপুর। পিতা রামগতি ভট্টাচাৰ্য শোভাবাজার রাজবাটীর পুরোহিত ছিলেন। রামকুমার সংস্কৃত অধ্যয়ন করে ‘বিদ্যারত্ন উপাধি লাভ করেন। যৌবনকালে তিনি আনুষ্ঠানিক হিন্দুধর্মে আস্থা হারিয়ে ব্ৰাহ্মসমাজে যোগদান করেন। মহর্ষি দেবেন্দ্ৰনাথ সংস্কৃতজ্ঞ ও ধর্মপ্রাণ রামকুমারকে বিশেষ মেহের চক্ষে দেখতেন। নানাস্থানে ভ্ৰমণকালে তিনি মহর্ষির ভ্রমণ-সঙ্গী ছিলেন। ব্ৰাহ্ম-নেতৃবৃন্দের আগ্রহে ও চেষ্টায় ব্ৰাহ্মসমাজের প্রচারক নিযুক্ত হয়ে বাঙলা, আসাম ও ওড়িশার নানাস্থানে ভ্ৰমণ করেন। আসামে প্রচারকার্যে রত থাকা কালে তিনি ও দ্বারকানাথ গাঙ্গুলী নিজেদের জীবন বিপন্ন করেও আসামের চা-বাগিচায় নিযুক্ত শ্রমিকদের দুঃখ-দুৰ্দশা দেখে ধারাবাহিকভাবে সঞ্জীবনী পত্রিকায় ‘কুলী-কাহিনী’ নিবন্ধ প্ৰকাশ করেন। এই নিবন্ধগুলি দেশবাসীর, এমন কি শাসকবর্গের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এর ফলে ‘কুলী’-দিগের দুঃখ-দুৰ্দশা দূরীকরণের জন্য শাসকশ্রেণী কতকগুলি আইন বিধিবদ্ধ করতে বাধ্য হয়। ১৮৮৫ খ্রী. বীরভূমের রামপুরহাট অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের সময় দুৰ্ভিক্ষ-কবলিত নরনারীর সেবা করে সর্বসাধারণের কৃতজ্ঞতাভাজন হন। ১৮৮৮ খ্রী. স্ত্রী ও একটি শিশুপুত্রের অকালমৃত্যুর পর তিনি নর্মদানদীতীরবাসী এক মহাপুরুষের নিকট সন্ন্যাস-দীক্ষা গ্ৰহণ করে ‘স্বামী রামানন্দ ভারতী’ নামে পরিচিত হন। সন্ন্যাসগ্রহণের পর তিনি ব্ৰাহ্মসমাজের পদ ত্যাগ করেন এবং অধিকাংশ সময় হিমালয় অঞ্চলেই অতিবাহিত করেন। সুপ্ৰসিদ্ধ সাহিত্যিক জলধর সেন লিখিত ‘হিমালয়’ ও ‘পথিক’ গ্ৰন্থদ্বয়ে য়ে স্বামীজীর চরিত্র অঙ্কিত হয়েছে তিনিই পূর্বাশ্রমের রামকুমার বিদ্যারত্ন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ : ‘উদাসীন সত্যবাবার আসাম ভ্ৰমণ’, ‘চিরযাত্রী’, ‘চারুদত্তের গুপ্তধন আবিষ্কার, ‘অলৰ্কচরিত’, ‘সাধন-পঞ্চক’, ‘যাজ্ঞবল্ক্যচরিত’, ‘হিমারণ্য’ প্রভৃতি।
পূর্ববর্তী:
« রামকুমার নদী
« রামকুমার নদী
পরবর্তী:
রামকৃষ্ণ গোসাঁই »
রামকৃষ্ণ গোসাঁই »
Leave a Reply