রাধাগোবিন্দ বসাক (৮-১-১৮৮৫ — ১০-১২-১৯৮২)। ঢাকা। বিশিষ্ট প্ৰাচ্যতত্ত্ববিদ, ভারতীয় লেখতত্ত্ব ও লিপিশাস্ত্ৰে সুপণ্ডিত। ১৯০১ খ্ৰী. বৃত্তিসহ এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অব্ৰাহ্মণ ছাত্র হয়েও সংস্কৃতভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অধিকার অর্জন উল্লেখযোগ্য। এমএ পাশের পর কিছুদিন স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। ভাষাবিদ পণ্ডিত হরিনাথ দের অধীনে কয়েক বছর প্রাচীন ভারতীয় লেখমালা ও লিপিতত্ত্ব বিষয়ে গবেষণা করেন। ১৯১১ খ্রী. রাজশাহী কলেজে এবং ১৯১১-২১ খ্রী. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত, পালি ও প্ৰাকৃত ভাষার অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৩৩ খ্রী. প্রেসিডেন্সী কলেজে যোগ দিয়ে ১৯৪০ খ্রী. অবসরগ্রহণ করে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি, পালি এবং সংস্কৃত বিভাগগুলিতেও পড়াতেন। ‘বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি’র সদস্য হিসাবে দিনাজপুরে আবিষ্কৃত গুপ্ত সম্রাটদের পাঁচটি তাম্রশাসনের পাঠোদ্ধার ও সম্পাদনা করেন। তিনি দামোদরপুর লেখমালা সংক্রান্ত প্ৰবন্ধের জন্য কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রিফিথ পুরস্কার লাভ করেন। প্ৰথম প্ৰকাশিত গ্ৰন্থ ‘হিস্ট্রি অব নর্থ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’ (১৯৩৩)। এই প্ৰবন্ধের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পি-এইচডি ডিগ্ৰী পান। অবসরগ্রহণের পর পূর্ণ উদ্যমে ভারতের প্রাচীন ইতিহাসের অনুসন্ধানে উদ্যোগী হন। তাঁর কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রের এবং ‘বাবনবহো’ গ্রন্থের বঙ্গানুবাদ উল্লেখযোগ্য। ভাষাবিদ হিসাবে মিশ্র সংস্কৃতে রচিত দুরূহ। বৌদ্ধগ্রন্থ ‘মহাবস্তু অবদান’-এর বঙ্গানুবাদ ও সম্পাদনা তাঁর স্মরণীয় কীর্তি। ‘অশোক লেখমালা’র সঠিক ও সুসম্পাদিত সংস্করণ গ্ৰন্থ প্ৰকাশ করেন। সন্ধ্যাকর নন্দীর ‘রামচরিত’ এবং ‘গাথা সপ্তশতী’রও অনুবাদ করেন। সংস্কৃত পণ্ডিত হিসাবে রাষ্ট্রপতির সম্মান অভিজ্ঞান এবং সংস্কৃত কলেজ থেকে ‘বিদ্যাবাচস্পতি’ উপাধি পান। এশিয়াটিক সোসাইটির সাম্মানিক ফেলো ছিলেন। সংস্কৃত ও প্রাকৃত সাহিত্য এবং প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস নিয়ে তাঁর মৌল রচনা ও গ্রন্থের সংখ্যা অনেক।
পূর্ববর্তী:
« রাধাগোবিন্দ নাথ, ড. বিদ্যাবাচস্পতি
« রাধাগোবিন্দ নাথ, ড. বিদ্যাবাচস্পতি
পরবর্তী:
রাধাচরণ চক্রবর্তী »
রাধাচরণ চক্রবর্তী »
Leave a Reply