রসিকলাল দাস ১ (১২৪৮ — ১০-১২-১৩২০ ব) দক্ষিণখণ্ড-বর্ধমান। প্রখ্যাত কীর্তনীয়া অনুরাগী দাস। একজন প্ৰসিদ্ধ মনোহর সাহী কীর্তনীয়া। কতকগুলি অভিনব তাল, সুর ও চালের সৃষ্টি করে তিনি মনোহরসাহী কীর্তনকে শ্রুতিমধুর করেন। প্ৰসিদ্ধ কীর্তন-গায়ক গণেশ দাস তাঁর ছাত্র ছিলেন।
রসিকলাল দাস ২ (১৮৯৯ –- ৩-৮-১৯৬৭) ফরমাইশখানা-সেনহাটি-খুলনা। রামচন্দ্র। বারুজীবী সাধারণ শিক্ষিত দরিদ্র পিতারসন্তান। স্কুলের ছাত্রাবস্থায় গুপ্ত বিপ্লবী দলের সংস্পর্শে এসে সেবাকার্যে ব্ৰতী হন। প্ৰথম মহাযুদ্ধের সময় বাঘাযতীনের মৃত্যু ও অন্যান্যদের গ্রেপ্তারের পর বিপ্লবের প্রস্তুতি ও সংগঠনের কাজ করেন। ‘প্রবুদ্ধ সমিতি’ স্থাপনের মাধ্যমে স্কুল-কলেজের ছাত্রদের পাঠাগার স্থাপন ও সমাজসেবার দ্বারা কর্মী গঠনের চেষ্টা করেন। ১৯১৮ খ্রী. প্ৰবেশিকা এবং ১৯২০ খ্রী. আইএ পাশ করে বি-এ, পাঠরত অবস্থায় অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে কলেজ ত্যাগ করে পুরানো বিপ্লবীদের সঙ্গে দৌলতপুর সত্যাশ্রমে যোগ দেন। দলের নির্দেশে আন্দলপুর শাখা আশ্রমে গিয়ে ৫ বছর সংগঠনের কাজ করেন। এই সময় নেতাদের গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিসের তৎপরতা শুরু হলে তাকে গুপ্ত বিপ্লবাত্মক ঘাঁটি তৈরীর জন্য কলিকাতা এবং বাঙলার অন্যান্য অঞ্চলে নজর দিতে হয়। নেতারা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি দলের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার আক্রমণের পর (১৯৩০) আত্মগোপনকারী বিপ্লবীদের আশ্রয় দেন। এইসময় টেগার্ট হত্য-চেষ্টায় দীনেশচন্দ্র মজুমদার ধরা পড়েন।। এই প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হাইকোর্টের বিচারে মুক্তি পান। গুপ্ত বিপ্লবপস্থায় বিশেষ দক্ষতার জন্য পুলিস প্রত্যক্ষ প্রমাণ সংগ্রহে অপারগ হয়। আদালতের বিচারে মুক্তি পেলেও সরকার তাঁকে পেশোয়ার, বেরিলি ও হিজলি জেলে ৮ বছর আটক রাখে। মুক্তি পাবার পর কংগ্রেসের সহসম্পাদকরূপে কাজ করবার সময় ১৯৪২ খ্রী. ‘ভারত-ছাড়’ আন্দোলনের পূর্বে গ্রেপ্তার হয়ে ৫ বছর আটক থাকেন। ১৯৪৬ খ্রী. মুক্ত হন। ১৯৪৯ খ্রী. শরণার্থীদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপন করে সম্পাদক হিসাবে ১৯৬৩ খ্রী. অন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করেন। খ্যাতি ও প্ৰাপ্তির আশা না রেখে যে-সব বিপ্লবী আত্মত্যাগের মহৎ দৃষ্টান্ত রেখেছেন তিনি তাঁদের একজন।
পূর্ববর্তী:
« রসিকলাল দত্ত
« রসিকলাল দত্ত
পরবর্তী:
রহিমউল্লা »
রহিমউল্লা »
Leave a Reply