রমাকান্ত রায় (১৮৭৩ — ৩-৫-১৯০৬) জলশুকা-শ্ৰীহট্ট। কালীকিশোর। ১৮৯৪ খ্রী. এন্ট্রান্স পাশ করে কলিকাতা সিটি কলেজে কিছুকাল পড়াশুনা করেন। ছাত্রাবস্থায় ব্ৰাহ্ম হন। ১৮৯৮ খ্রী. খনিবিদ্যা শিক্ষার জন্য জাপান যান এবং কৃতকাৰ্য হয়ে ১৯০৩ খ্রী কলিকাতায় ফেরেন। এরপর কাশ্মীর খনি ইঞ্জিনীয়ারের পদ পান। কিন্তু বিপ্লবী আন্দোলনে সহানুভূতিশীল রমাকান্ত বিপ্লবীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা সহজ হবে এই কারণে কাশ্মীরের উচ্চপদ ত্যাগ করে রানীগঞ্জে কম মাহিনীর চাকরিতে চলে আসেন। ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্ৰকাশিত চিঠিতে তিনি ভারতের জাতীয় অর্থনীতির ভিত্তিমূল স্থাপনে ভারতীয়দের শিল্পক্ষেত্রে আত্মনিয়োগে উৎসাহিত করে বলেন—’ভিক্টেরিয়া স্মৃতিসৌধ নির্মাণে বাঙ্গালীরা যদি এক কোটি টাকা চান্দা দিতে পারে-তবে চল্লিশ লক্ষ টাকা চাঁদা তুলে একটি ভাণ্ডার সৃষ্টি করে তার থেকে প্রতি বছর একশত ছাত্রকে বিদেশ থেকে কারিগরী শিক্ষা দিয়ে দেশের শিল্প-প্রচেষ্টায় উন্নতি-সহায়ক করা সম্ভব’। এই উপলক্ষে নিজ সৃষ্ট অর্থ-ভাণ্ডারের সাহায্যে চারজন ছাত্রকে বিদেশে পাঠিয়ে প্রতি মাসে মোট দুই শ টাকা পাঠাতেন। অথচ রানীগঞ্জে তাঁর মাহিনী ছিল মাত্র আড়াই শ টাকা। স্বদেশী আন্দোলনের পূর্বেই স্বদেশী ব্যবহারের প্রচার করেন। শ্রমের মর্যাদায় বিশ্বাস করতেন বলে দেশী বস্ত্রের বান্ডিল কাধে করে ফেরী করতে লজা পান নি। বার্ন কোম্পানীর কেরানীগণ সাহেব ওপরওয়ালার অপমানের প্রতিবাদে ১৯০৪ খ্রী. ধর্মঘট করলে তিনি তাদের সাহায্যার্থে অর্থসংগ্রহ করেন। মাত্র ৩২ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।
পূর্ববর্তী:
« রবীন্দ্ৰনাথ মৈত্র
« রবীন্দ্ৰনাথ মৈত্র
পরবর্তী:
রমানাথ ঠাকুর বিদ্যারত্ন, ভট্টাচাৰ্য »
রমানাথ ঠাকুর বিদ্যারত্ন, ভট্টাচাৰ্য »
Leave a Reply