রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮২৭ – ১৩-৫-১৮৮৭) বাকুলিয়া-হুগলী। রামনারায়ণ। হুগলী মহসীন কলেজে কিছুদিন পড়েছেন। ইংরেজী, সংস্কৃত ও প্রাচীন ওড়িয়া কাব্য-সাহিত্যে তাঁর যথেষ্ট বুৎপত্তি ছিল। ঈশ্বর গুপ্তের সাহচর্যে ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায় তিনি সাহিত্য রচনা শুরু করেন। ১৮৫৫ খ্ৰী. প্রকাশিত ‘এড়ুকেশন গেজেট’ পত্রিকার সহ-সম্পাদক ছিলেন। ঐ সময়কার এড়ুকেশন গেজেটে তাঁর গদ্য ও পদ্য উভয় রচনাই প্ৰকাশিত হত। ১৮৬০ খ্ৰী. কলিকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজে ৬ মাস অধ্যাপনার পর আয়কর অ্যাসেসর ও ডেপুটি কালেক্টর হন। ক্রমে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট হয়ে সুনামের সঙ্গে চাকরি করে ১১-৪-১৮৮২ খ্রী. অবসর নেন। একজন স্বদেশপ্রেমিক কবিরূপে ইতিহাসে স্বাক্ষর রেখে গেছেন। রচিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘পদ্মিনী উপাখ্যান’, ‘কর্মদেবী’ এবং ‘শূরসুন্দরী’। টডের অ্যানালস অফ রাজস্থান থেকে উপাখ্যান অংশ নিয়ে ‘পদ্মিনী উপাখ্যান’ রচনা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর স্বদেশী যুগের বিপ্লবীগণ পদ্মিনী উপাখ্যানের অংশ ‘স্বাধীনতাহীনতায় কে বাচিতে চায়/দাসত্ব শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায়’ শীর্ষক পংক্তিগুলি মন্ত্ররূপে উচ্চারণ করতেন। তিনি সংস্কৃত কুমারসম্ভবের পদ্যানুবাদ করেছিলেন। নীতিকুসুমাঞ্জলি তাঁর অপর পুস্তিকা। তাঁর ‘কাঞ্চী-কাবেরী’ (১৮৭৯) কাব্য-গ্ৰন্থ প্ৰাচীন ওড়িয়া কাব্যের অনুসরণে লিখিত। তিনি ‘উৎকল দর্পণ’ নামে সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠা করেন। ওড়িশার পুরাতত্ত্ব ও ওড়িয়া ভাষা সম্বন্ধে বহু নিবন্ধ তিনি লিখেছেন। তাঁর ‘কলিকাতা কল্পলতা’ গ্ৰন্থই সম্ভবতঃ বাংলাভাষায় প্রথম কলিকাতার পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস। ইংরেজী-প্রভাবিত বাংলা সাহিত্যের তিনি অন্যতম পথপ্ৰদৰ্শক।
পূর্ববর্তী:
« রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
« রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
পরবর্তী:
রঙ্গলাল মুখোপাধ্যায় »
রঙ্গলাল মুখোপাধ্যায় »
Leave a Reply