যোগেশচন্দ্র রায়, বিদ্যানিধি (২০-১০-১৮৫৯ – ৩০-৭-১৯৫৬) দিগড়া-হুগলী। পিতার কর্মস্থল বাঁকুড়ায় জন্ম। ১৮৮৩ খ্রী. বছরের একমাত্র ছাত্র হিসাবে বটানীতে ২য় বিভাগে এমএ পাশ করে কটক র্যাভেনশ কলেজের লেকচারার হন। একটানা ৩০ বছর অধ্যাপনার পর ১৯১৯ খ্রী. অবসর গ্ৰহণ করেন। এরপর ১৯২০ খ্রী. বাঁকুড়ায় ফিরে আমৃত্যু সেখানে বাস করেন। ৩৬ বছরের অধ্যাপনা জীবনেও তিনি ১২ বছর বাংলা ভাষা-চর্চায়, ১২ বছর জ্যোতির্বিদ্যাচর্চায় এবং ১২ বছর দেশীয় কলা-চৰ্চায় ব্যাপৃত ছিলেন। ‘প্রবাসী’, ‘সাহিত্য’, ‘বঙ্গদর্শন’ ও ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকায় প্ৰবন্ধাদি লিখতেন। ওড়িশার জঙ্গলরাজ্য খণ্ডপাড়ার জ্যোতির্বিদ চন্দ্ৰশেখর বা পঠানী সামন্তর ইংরেজী জীবনচরিত রচনা করে তাঁকে প্ৰাচ্য ও পাশ্চাত্যের পণ্ডিত-সমাজে পরিচিত করার জন্য পুরীর পণ্ডিতসভা কর্তৃক ‘বিদ্যানিধি’ উপাধি-ভূষিত হন। ‘সিদ্ধান্তদর্শন’ গ্ৰন্থ সম্পাদনা ও ‘বাশুলী চণ্ডীদাস’ নামে পুথি আবিষ্কার করেন। তিনি বাংলা বানানে দ্বিত্ব বর্জন রীতির প্রচলনকারী। ‘Ancient Indian Life’ গ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র-স্মৃতি পুরস্কার, পূজাপার্বণ গ্রন্থের জন্য বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের রামপ্রাণ গুপ্ত পুরস্কার, বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী স্বর্ণপদক ও সরোজিনী পদক পান। উৎকল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি ডক্টরেট ছিলেন। ১৭-৪-১৯৫৬ খ্রি বাঁকুড়ায় অনুষ্ঠিত কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন উৎসবে তাকে ডক্টরেট উপাধি দ্বারা সম্মানিত করা হয়। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের বিশিষ্ট সভ্য, কয়েক বছর সহ-সভাপতি ও এক বছর সভাপতি ছিলেন। বিজ্ঞান পরিষদ, উদ্ভিদ বিদ্যা পরিষদ ও উৎকল সাহিত্য সমাজের সভ্য ছিলেন। তাঁর রচিত বিজ্ঞান ও সাহিত্য-বিষয়ক উল্লেখযোগ্য পাঠ্যপুস্তক : ‘পত্ৰালি’ (২ খণ্ড), ‘আমাদের জ্যোতিষী ও জ্যোতিষ’, ‘রত্নপরীক্ষা’, ‘শঙ্কুনিৰ্মাণ’, ‘বাংলা ভাষা’, ‘বেদের দেবতা ও কৃষ্টিকাল’, ‘চণ্ডীদাসচরিত’ প্রভৃতি। তিনি ৪ খণ্ডে ‘বাঙ্গালা শব্দকোষ’ সম্পাদনা করেন।
পূর্ববর্তী:
« যোগেশচন্দ্র ঘোষ, আয়ুর্বেদশাস্ত্রী
« যোগেশচন্দ্র ঘোষ, আয়ুর্বেদশাস্ত্রী
পরবর্তী:
যোগেশচন্দ্ৰ গুপ্ত »
যোগেশচন্দ্ৰ গুপ্ত »
Leave a Reply