যামিনী রায় (১১-৪-১৮৮৭ – ২৪-৪-১৯৭২) বেলিয়াতোড়–বাঁকুড়া। রামতারণ। বাল্যে বেশীর ভাগ সময় নিজ গ্রামাঞ্চলের মাটির মূর্তি-শিল্পীদের সঙ্গে কাটাতেন। এইভাবেই তাঁর শিল্পী জীবনের সূত্রপাত। ১৯০৩ খ্ৰী. কলিকাতার আর্ট স্কুলে (বর্তমানে কলেজ) ভর্তি হন। ১৯১৮/১৯ খ্রী. থেকে ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ আর্টের পত্রিকায় তাঁর ছবি প্ৰকাশিত হতে থাকে। ১৯৩৪ খ্রী. তাঁর ছবি সর্বভারতীয় প্রদর্শনীতে ভাইসরয়ের স্বর্ণপদক লাভ করে। ভারতীয় চিত্রকলায় তাঁর স্বকীয়তা নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল। বিদেশী সমালোচকদের মতে তাঁর সৃষ্টি প্রকৃত ‘ভারতীয়ত্ত্বের’ গুণ-সংবলিত। ১৯৫৫ খ্রী। তিনি ‘পদ্মভূষণ’ উপাধি-ভূষিত হন। বহুবার বিদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ পেয়েও দেশ ছেড়ে কোথাও যান নি। তিনি আর্ট স্কুলে গিলার্ডি সাহেবের কাছে পাশ্চাত্য রীতির অঙ্কন-পদ্ধতি ও তেল রং-এ আঁকায় অভ্যস্ত হলেও পরবর্তী জীবনে জলরং-এ নিজস্ব স্টাইল সৃষ্টি করতে সক্ষম হন। কলেজ থেকে বেরোবার পর তাকে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকমের কাজ করতে হয়। ততদিনে তাঁর শিল্পখ্যাতি ছড়াতে শুরু করে। কালীঘাটের পটুয়াদের অঙ্কিত ছবির শৈলীর দ্বারা তিনি বিশেষভাবে প্রভাবিত হন। এইসঙ্গে ফরাসী চিত্রধারার বিশেষ গোষ্ঠী যাঁরা সরলরেখার বদলে ‘কার্ভ; ব্যবহারের পক্ষপাতী, তাঁদের চিত্ৰকল্প তাঁর মনে রেখাপাত করে। ৩৪ বছর বয়সে পাশ্চাত্য রীতি ত্যাগ করে নিজের চিন্তাধারা অনুসারে পথ তৈরী করতে থাকেন। সমতল কাগজ ছেড়ে অসমতল বুনটের প্যাটার্ন সংবলিত ক্যানভাস তিনি ব্যবহার করতে থাকেন। তাঁর তুলিতে রাধাকৃষ্ণ ও যীশুর মতই সরলতায় ফুটে উঠত গ্রাম্য চাষী, কামার, কুমোর, সাঁওতাল, ফকির, বৈষ্ণব প্রভৃতি প্রতিটি ছবি।
পূর্ববর্তী:
« যাদুমণি
« যাদুমণি
পরবর্তী:
যামিনী সরকার »
যামিনী সরকার »
Leave a Reply