যাদবেশ্বর তর্করত্ন, মহামহোপাধ্যায় (২২-১২-১২৫৬ – ৭-৫-১৩৩১ বঙ্গ) ইটাকুমারী-রংপুর। আনন্দেশ্বর ভট্টাচাৰ্য। কাশীতে কৈলাসচন্দ্ৰ শিরোমণির কাছে ন্যায় ও বৈশেষিক দর্শন অধ্যয়ন করে ‘তর্করত্ন’ উপাধি লাভ করেন। পরে বিশুদ্ধানন্দ স্বামীর কাছে যোগ ও বেদান্ত দর্শন অধ্যয়ন করেন। প্ৰাচ্য ও পাশ্চাত্য দর্শনের তুলনামূলক আলোচনাসূত্রে অধ্যাপক গ্রিফিথস, সাহেবের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। তিনি প্রাচ্য ভাষাতত্ত্ববিদ গ্রীয়ারসনকে ‘লিঙ্গুয়িস্টিক সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’ গ্রন্থ রচনায় সাহায্য করেন। রংপুর হাই স্কুলের পণ্ডিত এবং পরে কলেজ স্থাপিত হলে ঐ কলেজের অধ্যাপক হন। কিন্তু কলেজটি উঠে গেলে শ্ৰীঅরবিন্দের পিতা কৃষ্ণধন ঘোষের উদ্যোগে চতুষ্পাঠী স্থাপন করে অধ্যাপনা শুরু করেন। নবদ্বীপের বিবুধজননী সভা তাঁকে ‘পণ্ডিতরাজ’, বারাণসীধামের পণ্ডিতমণ্ডলী ‘কবিসম্রাট’, কাশী ভারতধর্মমহামণ্ডল ‘পণ্ডিতকেশরী’ এবং সরকার ‘মহামহোপাধ্যায়’ উপাধি দেন (১৯০৫)। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে যোগদান করে প্রকাশ্য সভায় তিনি প্ৰতিবাদ করেন। এইজন্য রাজপুরুষেরা তাকে ‘পলিটিক্যাল পণ্ডিত’ আখ্যা দেন। তাঁর মতে সমুদ্রযাত্রা শাস্ত্ৰবিরুদ্ধ নয়। বাল্য-বিবাহ ও গান্ধৰ্ব-বিবাহ বিষয়েও তাঁর মত উদার ছিল। তাঁর উদ্যোগে রংপুরে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের একটি শাখা স্থাপিত হয় এবং তিনি তার সভাপতি ছিলেন। বগুড়া শহরে উত্তরবঙ্গ সাহিত্য সম্মিলনে সভাপতি এবং প্রবাসী বঙ্গ সাহিত্য সম্মিলনে দর্শনশাখার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাংলা মাসিক পত্ৰাদিতে গবেষণামূলক প্ৰবন্ধ লিখতেন। সংস্কৃত ভাষায় গ্ৰন্থ রচনা করেছেন। বাংলা ভাষায় তাঁর রচিত গ্ৰন্থ: ‘দ্রৌপদীকাব্য’, ‘অশোক’ (উপন্যাস), ‘বিলাতী বিচার’, ‘আমি একটি অবতার’ (নকশা) ইত্যাদি।
পূর্ববর্তী:
« যাদবেন্দ্ৰনাথ পাঁজা
« যাদবেন্দ্ৰনাথ পাঁজা
পরবর্তী:
যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়, ডাঃ »
যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়, ডাঃ »
Leave a Reply