মুনীর চৌধুরী (১৯২৫ – ডিসেম্বর ১৯৭১) মানিকগঞ্জ-ঢাকা। বাঙলাদেশের অন্যতম বিশিষ্ট নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সমালোচক ও বাগ্মী। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইএস-সি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী অনার্স নিয়ে বি-এ, ও ১৯৪৭ খ্রী. এম.এ পাশ করেন। বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা করার পর ১৯৫০ খ্রী. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। পূর্ব-পাকিস্তানে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে এক বিশেষ সক্রিয় ভূমিকা গ্ৰহণ করে কারাবরণ করেন। কারাবাসকালে ১৯৫৪ খ্রী. তিনি বাংলায় এম.এ. পরীক্ষা দিয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। মুক্তিলাভের পর ইংরেজী বিভাগ ছেড়ে তিনি বাংলা বিভাগে যোগ দেন এবং শিক্ষক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৬৮ খ্রী. হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাতত্ত্বে এম.এ ডিগ্ৰী লাভ করেন। রচিত নাটক : ‘কবর’, ‘চিঠি’, ‘দণ্ডকারণ্য, ‘দণ্ড ও দণ্ডধর’, ‘রক্তাক্ত প্ৰান্তর’, ‘পলাশীর ব্যারাক ও অন্যান্য’। কয়েকটি অনুবাদমূলক নাটকও তিনি লিখেছেন। ‘মীর মানসী’, ‘তুলনামূলক সমালোচনা’ ও ‘বাঙলা গদ্যরীতি’ তাঁর উল্লেখযোগ্য প্ৰবন্ধ-সাহিত্য। তাছাড়া বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও সঙ্কলনগ্রন্থে তাঁর বহুসংখ্যক ছোটগল্প প্ৰকাশিত হয়েছে। সাহিত্যকর্মের জন্য ১৯৬২ খ্রী। তিনি বাঙলা একাডেমী পুরস্কার ও ১৯৬৩ খ্রী. দাউদ পুরস্কার পান। এই সাহিত্যিক পূর্ব-পাকিস্তানের মুক্তিযুদ্ধকালে পাকফৌজ নিয়োজিত আল-বদর বাহিনী কর্তৃক ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ খ্ৰী. ধৃত হয়ে নিখোঁজ হন। ঐ একই দিনে কথাশিল্পী আনোয়ার পাশা, রাশীদুল হাসান, সন্তোষ ভট্টাচার্য, গিয়াসুদ্দীন আহমেদ, ডক্টর আবুল খয়ের, ডক্টর ফয়জল মহী প্রভৃতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনীষিবৃন্দ বদর-বাহিনীর হাতে মীরপুরের বধ্যভূমিতে নিহত হন। এই বছরই দার্শনিক পণ্ডিত গোবিন্দচন্দ্ৰ দেব, জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, কবিয়াল আলতাফ মাহমুদ, বিপ্লবী সাহিত্য-সংগঠক হুমায়ুন কবির, গণিতবিদ আবুল কালাম আজাদ প্রভৃতি বহু বুদ্ধিজীবী পাক-বাহিনীর হাতে প্ৰাণ হারান।
পূর্ববর্তী:
« মুনীন্দ্ৰনাথ ভট্টাচাৰ্য
« মুনীন্দ্ৰনাথ ভট্টাচাৰ্য
পরবর্তী:
মুন্শী জিনাতুল্লাহ্ সাহেব »
মুন্শী জিনাতুল্লাহ্ সাহেব »
Leave a Reply