মুজফফর আহমদ (৫-৮-১৮৮৯ –- ১৮-১২-১৯৭৩) সন্দীপের মুসাপুর-নোয়াখালী। মনসুর আলী। ভারতে মার্ক্সবাদ প্রচার ও মার্ক্সবাদী সংগঠন, প্ৰতিষ্ঠার অন্যতম পথিকৃৎ। এদেশে কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯১৩ খ্রী. ম্যাট্রিক পাশ করেন। ছাত্রাবস্থায়ই স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দেন। সাহিত্য ও সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে তিনি প্ৰথমে দেশসেবার কাজে আত্মপ্ৰকাশ করেন। ১৯২০ খ্রী. কাজী নজরুল ইসলামের সহযোগে ‘নবযুগ’ পত্রিকা প্ৰকাশ করেন। এই সময়ই তিনি মার্ক্সবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এ বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। পরে নজরুল সম্পাদিত ‘ধূমকেতু’ পত্রিকায় (১৯২২) দ্বৈপায়ন ছদ্মনামে ভারতের রাজনৈতিক সমস্যা এবং কৃষক ও শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক রচনা লেখেন। ১৯২৩ খ্রী. প্রথম গ্রেপ্তার হন। ১৯২৪ খ্রী. কানপুর বলশেভিক (কমিউনিস্ট) ষড়যন্ত্র মামলায় তাঁর চার বছর সশ্রম কারাদণ্ড হয়। গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় ১৯২৫ খ্রী. ছাড়া পান। এই সময় আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট সংস্থাগুলির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন। ১৯২৬ খ্রী. তাঁর সম্পাদনায় দলের প্রথম বাংলা পত্রিকা ‘গণবাণী প্ৰকাশ লাভ করে। ১৯২৯–৩৩ খ্রী.এই পত্রিকাতেই আন্তর্জাতিক সঙ্গীতের ও কমিউনিস্ট ইস্তাহারের বঙ্গানুবাদ প্রথম ছাপা হয়। শ্রমিক-কৃষকের সমস্যা, মাষ্ট্ৰীয় দর্শন প্রভৃতি নিয়েও এতে নিয়মিত আলোচনা চলত। ১৯২৯–৩৩ খ্রী. ঐতিহাসিক মীরাট ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী হিসাবে তিনি তিন বছর কারাদণ্ড ভোগ করেন। সারা ভারত কৃষক সভার (১৯৩৬) প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ২৫-৩-১৯৪৮ খ্রী. কমিউনিস্ট পার্টি বেতমাইনী হলে নিবর্তনমূলক আটক আইনে তিনি ১৯৫১ খ্ৰী. পর্যন্ত আটক থাকেন। ১৯৬২ খ্রী. চীন-ভারত সীমান্ত সঙ্ঘর্ষের সময় তাঁকে ভারতরক্ষা আইনে দুই বছর আটক রাখা হয়। ৪০ বছর ধরে ভারতে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, ন্যাশনাল বুক এজেন্সীর একজন প্রধান সংগঠক ছিলেন। গণশক্তি প্রিন্টার্স প্রেস তিনিই গড়ে তোলেন। ‘কাকাবাবু’ নামে তিনি কর্মী ও নেতাদের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। রচিত গ্ৰন্থ: ‘নজরুল স্মৃতিকথা’, ‘ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাস’ প্রভৃতি।
পূর্ববর্তী:
« মুজতবা আলী, সৈয়দ
« মুজতবা আলী, সৈয়দ
পরবর্তী:
মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু »
মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু »
Leave a Reply