মার্শম্যান, জোশুয়া (২০-৪-১৭৬০ – ৫-১২-১৮৩৭) ইংল্যান্ড। জন। তন্তুবায়পুত্র মার্শম্যান ১৪ বছর বয়সে লন্ডনের পুস্তক-বিক্রেতার দোকানে চাকরি গ্রহণ করেন। ১৭৯১ খ্ৰী. ব্যাপটিস্ট পরিবারের হ্যানা শেফার্ডকে বিবাহ করে ব্যাপটিস্ট মতবাদে দীক্ষিত হন। ১৭৯৪ খ্রী. শিক্ষকের বৃত্তি গ্ৰহণ করেন। বহুভাষাবিদ ছিলেন। মিশনারী কাজে উৎসাহিত হয়ে ১৭৯৯ খ্রী. প্রচারকার্যের জন্য ভারতে আসেন। শ্ৰীীরামপুর মিশনকে কর্মকেন্দ্র নির্বাচন করে মিশনের ব্যয়নির্বাহের জন্য একটি স্কুল খোলেন। তাঁর স্ত্রীও একাজে সাহায্য করতেন। স্ত্রী হ্যানা বাঙলার নারীশিক্ষা প্রচলনে অগ্রণীর ভূমিকা পালন করেন। এই স্কুলটি ক্রমে শ্ৰীীরামপুর কলেজ ও ধর্মীয় শিক্ষালয়ে পরিণত হয়। এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে প্রচারকার্যের জন্য দুরূহ চীনা ভাষা শিখে ঐ ভাষায় বাইবেল অনুবাদ এবং ব্যাকরণ ও অভিধান রচনা করেন। ‘সংস্কৃত রামায়ণ’ তাঁর ও কেরীর যুগ্ম প্রচেষ্টায় অনুদিত হয়। ব্যাপটিস্ট মিশনারী সংস্থার কেরী ছিলেন নেতা, কিন্তু মার্শম্যান অনেক কাজ কেরীর বিরোধিতা সত্ত্বেও নিষ্পন্ন করেন–যেমন পত্রিকা প্ৰকাশনা। ‘ফ্রেন্ড অফ ইন্ডিয়া’, ‘সমাচার দর্পণ’ ও ‘দিগদর্শন’ নামে তিনটি পত্রিকা তাঁর চেষ্টায় প্রকাশিত হয়। সাপ্তাহিক ‘সমাচার দৰ্পণ’ মে ১৮১৮ খ্রী. প্ৰকাশিত হয়। গঙ্গাকিশোরের স্বল্পস্থায়ী ‘বাঙ্গালা গেজেট’ বাদ দিলে এটিই বাংলায় প্রথম সাপ্তাহিক। দিগদৰ্শন মাসিক পত্রিকাটি তাঁর আগের মাসে মার্শম্যান প্ৰকাশ করেন। ১৮২৬ খ্রী. তিনি একবার স্বদেশে যান ও ফেরার পথে ডেনমার্কের রাজার কাছে শ্ৰীরামপুর থিওলজিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন সংগ্ৰহ করেন। খ্ৰীষ্টীয় ধর্মজগতে এ এক অসাধারণ ঘটনা। ফলে শ্ৰীরামপুর কীয়েল ও কোপেনহেগেনের মত সমান ক্ষমতাসম্পন্ন এবং ভারতের ডিভিনিটি-বিষয়ক উপাধি-প্রদানের ক্ষমতাসম্পন্ন একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হয়। রামায়ণের ইংরেজী অনুবাদ, শ্ৰীরামপুর কলেজ স্থাপন ও পত্রিকা প্রকাশ—এই তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য জোশুয়া মার্শম্যান বঙ্গবাসীর চিরস্মরণীয়। রামমোহন রায়ের সঙ্গে ধর্মীয় বিতর্ক তাঁর ‘ফ্রেন্ড অফ ইন্ডিয়া’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ফলে রামমোহন বেদান্তের বাংলা অনুবাদে অনুপ্রাণিত হন। কেরীর মৃত্যুর পর (১৮৩৪) মার্শম্যান শ্ৰীরামপুর মিশনের নেতৃত্ব করেন। জন ক্লার্ক তাঁর পুত্র।
পূর্ববর্তী:
« মার্শম্যান, জন ক্লার্ক
« মার্শম্যান, জন ক্লার্ক
পরবর্তী:
মালকা জান, আগ্রাওয়ালী »
মালকা জান, আগ্রাওয়ালী »
Leave a Reply