মাধবেন্দ্র পুরী। পূৰ্ণিপাট—শ্ৰীহট্ট। ধর্মনিষ্ঠ ব্ৰাহ্মণ পরিবারে জন্ম। ব্যাকরণ, কাব্য ও ধর্মশাস্ত্রে পারদর্শী মাধবেন্দ্ৰ চতুষ্পাঠী স্থাপন করে অধ্যাপনা শুরু করেন। তাঁর অধ্যাপনার খ্যাতি পূর্ববঙ্গের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। স্ত্রীর মৃত্যু হলে সংসারে বীতস্পৃহ হয়ে কিশোর পুত্রকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন এবং কুলিয়া ও কুমারহট্টের মধ্যবর্তী বিষ্ণুগ্রামে এসে নূতন চতুষ্পাঠী স্থাপন করেন। অল্পকালের মধ্যে কুমারহট্ট, কাঞ্চনপল্লী (কাঁচড়াপাড়া) থেকে শুরু করে কুলীনগ্রাম, শান্তিপুর, নবদ্বীপ অবধি তিনি সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। অধ্যাপনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সাধনজীবনেরও উন্নতি হতে থাকে। ভাগবতকে তিনি অধ্যাত্ম সাধনার প্রধান অবলম্বন-রূপে গ্রহণ করেছিলেন। দক্ষিণদেশে ভাগবতের যে মাধুর্যময় বিকাশ ঘটে। সেই নিগুঢ় সাধনার সঙ্গে পরিচিত হবার জন্য সংসার ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। পুরী সম্প্রদায়ের এক সন্ন্যাসী নেতার কাছে সন্ন্যাসদীক্ষা গ্ৰহণ করে দক্ষিণাত্যের বিভিন্ন তীর্থে ভ্ৰমণ করেন। ক্ৰমে নৈষ্ঠিক ভক্তিসাধনার স্থলে কৃষ্ণপ্রেমের রসমধুর সাধনপথ তিনি বেছে নেন। সন্ন্যাসী, আচাৰ্য, গৃহস্থ সকলেই তাঁর প্রবর্তিত এই প্ৰেমধর্মের আশ্রয় গ্ৰহণ করতে থাকেন। তাঁর গৌড়ীয় সন্ন্যাসী শিষ্যদের মধ্যে প্রধান ঈশ্বরপুরী ও কেশব ভারতী। গোপালের সেবায় তিনি ব্ৰজমণ্ডলে দুই বছর কাটান। সেখান থেকে শান্তিপুর হয়ে নীলাচলে যান। তাঁর বিষয়ে কবিরাজ গোস্বামী লিখেছেন— ‘পৃথিবীতে রোপণ করি গেলা প্রেমাঙ্কুর/সেই প্ৰেমাঙ্কুরের বৃক্ষ চৈতন্য ঠাকুর’।
পূর্ববর্তী:
« মাধবী দাসী
« মাধবী দাসী
পরবর্তী:
মানকুমার বসুঠাকুর »
মানকুমার বসুঠাকুর »
Leave a Reply