মাখনলাল সেন (১১-১-১৮৮১ – ১১-৫-১৯৬৫) সোনারং-ঢাকা। গুরুন্নাথ। অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জন পিতার কর্মস্থল চট্টগ্রামে জন্ম। এমএ ক্লাশে পড়ার সময় স্বদেশী আন্দোলনের কালে বিপ্লবী দলে য়োগ দিয়ে ঢাকা যান এবং অনুশীলন সমিতির নেতা পুলিনবিহারী দাস গ্রেপ্তার হবার পর সমিতির নেতা হন। ১৯১০ খ্রী. তাঁর নামে ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলার গ্রেপ্তারী পরোয়ানা বার হলে আত্মগোপন করে কলিকাতায় আসেন। এখানে গোপনে অনুশীলন সমিতির কাজকর্ম চালাতে থাকেন। ১৯১৪ খ্রী. বর্ধমানে ও কাঁথিতে প্ৰবল বন্যা হলে তিনি বাঘা যতীনের সহায়তায় বন্যার্তাদের সাহায্যে এগিয়ে যান। এই ব্যাপারে বাঙলা সরকারের সঙ্গে প্ৰচণ্ড বিবাদ শুরু হয়। ১৯১৫ খ্রী. ‘ভারতরক্ষা আইন’ রচিত হলে তিনি চট্টগ্রামের টেকনাফ অঞ্চলে গ্রেপ্তার হন। ১৯২০ খ্রী. মুক্তি পেয়ে কলিকাতায় এসে কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে যোগ দেন। এই অধিবেশনে গান্ধীজীর সমর্থনে এগিয়ে যান। নাগপুর কংগ্রেসে অসহযোগ নীতি গৃহীত হলে ১৯২১ খ্ৰী। তিনি কলিকাতায় চিত্তরঞ্জনের অনুরোধে গৌড়ীয় সর্ববিদ্যায়তনের ভার গ্রহণ করেন। কিছুদিন পরে বিপ্লবী জীবনের বন্ধু সুরেশচন্দ্র মজুমদারের অনুরোধে ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’য় যোগদান করে ১ নভেম্বর ১৯৩০ খ্রী. অল্প কিছুদিনের জন্য সম্পাদক হন। ১২-১১-১৯৩০ খ্রী। রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সের প্রতিবাদে কলিকাতা পুলিস কমিশনারের আদেশ অমান্য করে মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে গ্রেপ্তার হন ও ৬ মাস কারাদণ্ড ভোগ করেন। ১৯৩৯ খ্রী. আনন্দবাজার পত্রিকা ছেড়ে ‘জার্নালিস্ট কর্নার’ নামে সাংবাদিক সঙ্ঘ প্ৰতিষ্ঠা করে ‘ভারত’ নামে একটি পত্রিকা প্ৰকাশ করেন। ১৯৪২-এর ‘ভারত-ছাড়’ আন্দোলনের সময় ‘ভারত’ পত্রিকা মারফত বিপ্লবী সাংবাদিকতার চূড়ান্ত আদর্শ স্থাপন করেন। ‘ভারত’ পত্রিকাটি রাজরোষে পড়লে তিনি আত্মগোপন করতে বাধ্য হন। কিছুদিনের মধ্যেই গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৪৫ খ্ৰী. পর্যন্ত অন্তরীণ থাকেন। মুক্তি পেয়ে পুনর্বার ‘ভারত’ পত্রিকাটি প্রকাশ করলেও দীর্ঘদিন চালাতে পারেন নি। দেশ স্বাধীন হবার পর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। ঢাকার সোনারং ‘ন্যাশনাল স্কুলে’র প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ‘সিডিসন কমিটি’র মতে, এই স্কুলটি ‘ছাত্রদের উপর সাংঘাতিক প্রভাব বিস্তার করিয়াছিল এবং ইহা বহু ডাকাতির জন্য দায়ী…’।
পূর্ববর্তী:
« মাখনলাল রায়চৌধুরী
« মাখনলাল রায়চৌধুরী
পরবর্তী:
মাণিক্যচন্দ্র তর্কভূষণ »
মাণিক্যচন্দ্র তর্কভূষণ »
Leave a Reply