মহেন্দ্ৰলাল সরকার, ডাঃ সিআইই (২-১১-১৮৩৩ – ২৩-২-১৯০৪) পাইকপাড়া-হাওড়া। তারকনাথ। প্ৰথমে কলুটোলা ব্রাঞ্চ স্কুল ও পরে হিন্দু কলেজের পড়া শেষ করে ১৮৬১ খ্রী. কলিকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে আইএমএস এবং ১৮৬৩ খ্রী. এমডি উপাধি পান। তিনি এবং জগদ্বন্ধু বসু কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় এমডি। প্রথম এমডি, চন্দ্ৰকুমার দে (১৮৬২)। উপাধিলাভের পর চিকিৎসা ব্যবসায় শুরু করে খ্যাতি লাভ করেন। ‘Bengal Branch of the British Medical Association’-এর সেক্রেটারী ও সহ-সভাপতি থাকার সময় তিনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির বিরুদ্ধে মত দেন। পরে হোমিওপ্যাথিতে বিশ্বাসী হয়ে ১৬-২-১৮৬৭ খ্রী. ঐ অ্যাসোসিয়েশনের ৪র্থ বার্ষিক সভায় অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা প্ৰণালীর সর্বজননিন্দিত কতকগুলি দোষ কীর্তন করে হ্যানিম্যানের আবিষ্কৃত প্ৰণালীর যুক্তিযুক্ততা প্ৰদৰ্শন করেন। ফলে উপস্থিত বহু সাহেব ও ভারতীয় ডাক্তারের বিরাগভাজন হন। অ্যাসোসিয়েশন থেকে তাকে বহিষ্কৃত করা হয় এবং সেই সঙ্গে তাঁর ওপর একঘরে করার মত অত্যাচার চলে। নিজ মত প্রকাশের জন্য তিনি ১৮৬৭ খ্রী. ‘Calcutta Journal of Medicine’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁর জীবিতকালে তিনিই ছিলেন সর্বপ্ৰধান হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। অক্রুর দত্তের পরিবারের রাজেন্দ্ৰ দত্ত হোমিওপ্যাথি প্রচারে তাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছিলেন। দেশবাসীকে বিজ্ঞানচর্চার সুযোগ দানের জন্য ২৯-৭-১৮৭৬ খ্রী ‘Indian ASSOciation for the Cultivation of Science’-সংস্থার প্ৰতিষ্ঠা তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তাঁর পরামর্শে সরকার বিবাহবিধি প্রণয়নে (Marriage Act III of 1872) মেয়েদের বিবাহের বয়স নূন্যপক্ষে ১৬ বছর নির্ধারণ করেছিলেন। ১৮৮৮ খ্রী. বঙ্গীয় প্ৰাদেশিক সম্মেলনে তিনি সভাপতিত্ব করেন। এই সম্মেলনে আসামের চা-শ্রমিকদের দুরবস্থা সম্বন্ধে প্ৰস্তাব নেওয়া হয়। মহেন্দ্রলাল শ্রমিকদের অপমানসূচক ‘কুলী’ শব্দ ব্যবহারে আপত্তি করেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো, অনারারি ম্যাজিস্ট্রেট, কলিকাতার শেরীফ (১৮৮৭) এবং বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য ছিলেন। ১৮৮৩ খ্রী. সিআইই, এবং ১৮৯৮ খ্ৰী. কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডক্টর অফ ল’ উপাধি পান। বৈদ্যনাথ রাজকুমারী কুষ্ঠাশ্ৰম প্রতিষ্ঠা করেন। চিকিৎসা বিজ্ঞান ছাড়াও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও জ্যোতিষে বিশেষ পাণ্ডিত্য ছিল।
পূর্ববর্তী:
« মহেন্দ্ৰলাল বিশ্বাস
« মহেন্দ্ৰলাল বিশ্বাস
পরবর্তী:
মহেশ সরকার »
মহেশ সরকার »
Leave a Reply