মদনমোহন তর্কালঙ্কার (১৮১৭ – ৯-৩-১৮৫৮) বিল্বগ্ৰাম–নদীয়া। রামধন চট্টোপাধ্যায়। সংস্কৃত কলেজের ছাত্র এবং ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগরের সতীর্থ ছিলেন। অসাধারণ কবিত্বশক্তির জন্য সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপকমণ্ডলী তাকে ‘কাব্যরত্নাকর’ উপাধি দেন ও পরে বন্ধুবৰ্গ তাকে ‘তৰ্কালঙ্কার’ উপাধি-ভূষিত করেন। ছাত্রাবস্থায়ই ‘রসতরঙ্গিণী’ ও ‘বাসবদত্তা’ নামে কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। হিন্দু কলেজের পাঠ শেষ করে প্ৰথমে হিন্দু কলেজ সংশ্লিষ্ট পাঠশালায়, পরে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে ও কৃষ্ণনগর কলেজে শিক্ষকতা করেন। ১৮৪৬ খ্রী. সংস্কৃত কলেজে সাহিত্যশ্রেণীর অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৮৫০ খ্রী. কলেজ ত্যাগ করে মুর্শিদাবাদের জজ-পণ্ডিতের পদলাভ করেন এবং ১৮৫৫ খ্ৰী. ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেটের পদে উন্নীত হন। কলিকাতায় ‘সংস্কৃতযন্ত্ৰ’ নামে মুদ্রাযন্ত্র স্থাপন করে অনেকগুলি প্রাচীন বাংলা ও সংস্কৃত গ্ৰন্থ সম্পাদনা করে মুদ্রিত করেন। বাঙলাদেশে স্ত্রীশিক্ষাপ্রসারের উদ্দেশ্যে ৭৫-১৮৪৯ খ্রী. বেথুন কর্তৃক হিন্দু ফিমেল স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে কন্যা ভুবনমালা ও কুন্দনমালাকে তিনি ঐ স্কুলে ভর্তি করেছিলেন। এর আগে মেয়েদের প্রকাশ্য বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের যথেষ্ট বাধা ছিল। তিনি নিজে বিনা বেতনে প্ৰতিদিন এই বিদ্যালয়ে বালিকাদের শিক্ষা দিতেন। ‘শিশু শিক্ষা’ (তিন ভাগ) রচনা করে তাদের পাঠ্যপুস্তকের অভাবও কিছুটা মোচন করেছিলেন। ‘সর্বশুভকরী’ পত্রিকার দ্বিতীয় সংখ্যায় (১৮৫০) তিনি স্ত্রীশিক্ষার পক্ষে একটি যুগান্তকারী দীর্ঘ প্ৰবন্ধ লিখেছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« মদন মাস্টার
« মদন মাস্টার
পরবর্তী:
মদনমোহন ভৌমিক »
মদনমোহন ভৌমিক »
Leave a Reply