মণীন্দ্ৰনাথ নায়েক (৩০-৬-১২৯৭ — ২৪-১২-১৩৮২ ব)। ভূষণচন্দ্ৰ। চন্দননগরে মাতুল রাজেন্দ্রনাথ নন্দীর গৃহে জন্ম। চন্দননগরের প্রথম সায়েন্স গ্রাজুয়েট। ১৯১৩ খ্রী. স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিএস-সি, পাশ করেন। পুলিসী রিপোর্টে প্রেসিডেন্সী কলেজে তাঁর এম.এসসি পড়ার আবেদন নামঞ্জুর হয়। মানিকতলা বোমা-মামলার কিছুকাল আগে থেকেই তিনি নারকেলের খোলে বারুদ ভরে বোমা তৈরির হাতেখড়ি নিয়েছিলেন। ফরমুলা দিয়েছিলেন চন্দননগরের ডাক্তার নগেন ঘোষ। পরে কলিকাতায় রিপন কলেজের কেমিষ্ট্রির অধ্যাপক সুরেশচন্দ্র দত্তর কাছে উন্নত ধরনের বোমা তৈরির শিক্ষা নেন। রাসবিহারী বসু ১৯১২ খ্ৰী. মণীন্দ্রনাথের তৈরি বোমা লাহোর, মীরাট ও দিল্লীতে পাঠান। এই বোমারই একটি দ্বারা ২৩-১২-১৯১২ তারিখে দিল্লীতে লর্ড হার্ডিঞ্জ আহত এবং তাঁর হাতি এবং মাহুত নিহত হয়। পুলিস তাঁকে কোনো দিনই ধরতে পারেনি। কলিকাতার রাজাবাজারে অমৃতলাল হাজরাকে তিনি উন্নত ধরনের বোমা তৈরি করতে সাহায্য করতেন। অমৃতলাল বোমার মালমশলা-সমেত ধরা পড়ার দিন তিনি ঘটনাচক্রে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। ফরাসী চন্দননগরের বাসিন্দা হওয়ায় সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করার অধিকার ইংরেজ পুলিসের ছিল না। পুলিসের দৃষ্টি এড়িয়ে ১৯১৫ খ্রী. থেকে বছর পাচেক তিনি চন্দননগরের বাইরে যেতে পারেন নি। রিডা কোম্পানীর লুট-করা মশার পিস্তল ও গুলির বৃহৎ অংশ চন্দনগরে সরিয়ে ফেলা হলে তাঁর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তিনি পালন করেন। ১৯১৯ খ্রী. ফ্রেঞ্চ ইন্ডিয়া লেজিসলেটিভ অ্যাসেমব্লির সদস্য নির্বাচিত হন এবং পরের বছর পণ্ডিচেরীতে অধিবেশনে যোগদানের অনুমতি পান। ১৯২৭ খ্রী. থেকে বছরে একবার করে পণ্ডিচেরীতে গিয়ে কিছুদিন কাটিয়ে আসতেন। শ্ৰীঅরবিন্দের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল। শ্ৰীঅরবিন্দ ১৯১০ – ‘৫০ খ্ৰী. পর্যন্ত মতিলাল রায়কে ফরাসী ভাষায় যে-সব চিঠি লিখতেন, সেগুলির পাঠোদ্ধার তিনিই করতেন। দীর্ঘকাল তিনি মতিলাল রায় প্রকাশিত ‘প্রবর্তক’ পত্রিকার সম্পাদনা করেন। প্রবর্তক সঙেঘ বিবিধ কর্মকাণ্ডে অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন। ১৯৭২ খ্ৰী. পর্যন্ত কলিকাতায় গিয়ে তিনি ঐ সব প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম দেখতেন।
পূর্ববর্তী:
« মণীন্দ্ৰনাথ দে, ডাঃ
« মণীন্দ্ৰনাথ দে, ডাঃ
পরবর্তী:
মণীন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় »
মণীন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় »
Leave a Reply