ভোলানাথ চন্দ্র (১৮২২ – ১৭-৬-১৯১০) কলিকাতা। রামমোহন। সুবৰ্ণ বণিক পরিবারে জন্ম। মাতামহ এন.সি. সেন ঢাকায় ইংরেজ রেসিডেন্টের দেওয়ান ছিলেন। ১৮৩০ খ্রী. ওরিয়েন্টাল সেমিনারী ও পরে ১৮৩২ খ্রী. হিন্দু কলেজে ভর্তি হন এবং ১৮৪২ খ্রী. পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। সতীর্থদের মধ্যে ছিলেন কিশোরীচাঁদ মিত্র, মাইকেল মধুসূদন, ভূদেব মুখোপাধ্যায় প্রভৃতি। ১৮৪৩ খ্রী. হাওড়ার হাউম্যান অ্যান্ড কোম্পানীতে শিক্ষানবীশ হয়ে ঢুকে ১৮৪৫ খ্ৰী. ঐ কোম্পানীর চিনির কালের এজেন্ট হিসাবে ৩০ বছর ছিলেন। ব্যবসায় শুরু করেও সাহিত্য-সাধনাকেই জীবনের পথ হিসাবে গ্রহণ করেন। তাঁর সমস্ত রচনাই ইংরেজীতে রচিত। ১৮৬৬ – ৬৭ খ্রী. রচিত ভ্ৰমণ-বৃত্তান্ত ধারাবাহিকভাবে ‘Saturday Journal’ পত্রিকায় প্রকাশ করতে থাকেন। তাঁর রচনাবলী মারফত বাঙলার তৎকালীন সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিচয় পাওয়া যায়। উক্ত ভ্রমণবৃত্তান্তই ট্যালবয়েস হুইলার সাহেবের ভূমিকাসহ ‘Travels of a Hindoo’ নামে ১৮৬৯ খ্রী. ইংল্যান্ডে প্রকাশিত হয়। ইতিহাস ও গবেষণামূলক রচনা তাঁর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গণিত-বিজ্ঞানের সাহায্যে ‘অন্ধকূপ হত্যার বিবরণ নিছক রটনা–একথা তিনিই প্ৰথম বলেন। দেশী শিল্পের সর্বনাশের ফলে দারিদ্র্য-বৃদ্ধির প্রতিকারকল্পে তিনিই প্রথম ইংল্যান্ডের পণ্য বর্জন করার প্রস্তাব করেন (১৮৭৪)। আয়ার্ল্যান্ডে বয়কটা শব্দ তখনও জনপ্ৰিয় হয় নি। তিনি দুই খণ্ডে রাজা দিগম্বর মিত্রের জীবনচরিত এবং পাঁচ খণ্ডে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জ্ঞান ও গবেষণার পরিচায়ক ‘A Voice for the Commerce and Manufactures of India’ গ্রন্থ রচনা করেন। কেউ কেউ মনে করেন, এই গ্ৰন্থ থেকেই স্বদেশী আন্দোলন ও বিদেশী বর্জনের বীজ সঞ্চারিত হয়। ব্রিটিশরাজ কর্তৃক অর্থনৈতিক শোষণ এবং জাতীয় অর্থনীতি সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার কথা তিনিই প্ৰথম বলেন।
পূর্ববর্তী:
« ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায়
« ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায়
পরবর্তী:
ভোলানাথ দত্ত »
ভোলানাথ দত্ত »
Leave a Reply