ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ১ (১৮৮৮? – ১০-৮-১৯৬৬) কলিকাতা। খ্যাতনামা চিত্রাভিনেতা। ১৯২৫’ লাইট অফ এশিয়া’ নির্বাক চিত্রে প্রথম আত্মপ্ৰকাশ করেন। সবাক চিত্রে প্রথম অভিনয় ‘দেনা পাওনা’ ছবিতে। পরে ‘রজত জয়ন্তী’, ‘জীবন মরণ’, ‘নর্তকী’, ‘অভিজ্ঞান, ‘পরাজয়’, ‘শোধবোধ’, ‘মৌচাকে টিল’, ‘নার্স সিসি’, ‘অঞ্জনগড়’, ‘যোগাযোগ, ‘পুষ্পধনু’ প্রভৃতি ছবিতে সাফল্যের সঙ্গে অভিনয় করেন।
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ২ (২৬-৮-১৯২০ – ৪-৩-১৯৮৩) ঢাকা। ঢাকার নবাব স্টেটের সদর মোক্তার জিতেন্দ্ৰনাথ। মাতা সুনীতি দেবী সরকারী শিক্ষাবিভাগে চাকরি করতেন। খ্যাতনামা কৌতুক অভিনেতা ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্র শিল্পী। প্রকৃত নাম সাম্যময়। ১২ বছর বয়সে বিপ্লবী আন্দোলনে যুক্ত হন। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তর সহচর, অধ্যাপক সত্যেন্দ্রনাথ বসুর প্রিয় ছাত্র ছিলেন। ১৯৪০ খ্রী. ঢাকা জগন্নাথ কলেজ থেকে আই.এ. পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু স্বদেশী আন্দোলনে জড়িত থাকায় রাজরোষে পড়ে ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হয়ে ১৯৪১ খ্ৰী. কলিকাতায় আসেন ও ‘আয়রন স্টিল কন্ট্রোলে’ চাকরি পান। চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় ১৯৪৬ খ্রী. ‘জাগরণ’ ছবিতে দুর্ভিক্ষ প্ৰপীড়িত চরিত্রে। কিন্তু সলিল সেনের ‘নতুন ইহুদি’ ছবি থেকেই তাঁর খ্যাতির শুরু। তার আগে ১৯৪৭ খ্রী. নাট্যমঞ্চের শিল্পী হিসাবে তিনি নাট্যজগতে পরিচিত হয়েছেন ‘নতুন ইহুদি’ নাটকে। ১৯৫১ খ্রী. পেশাদারী রঙ্গমঞ্চে আসেন। ১৯৫৬ খ্রী চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি অভিনয়ের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। প্ৰায় তিন শো ছবিতে অভিনয় করেছেন। একসময় সিনেমার টিকিট ঘরে উত্তম ও ভানু এই দুই নামের কদর প্রায় সমান ছিল। তাঁর মত আর কোনও অভিনেতার নামে ছবির নাম দেখা যায় নি। বেশির ভাগ ছবিতে এবং ব্যক্তিগত কথাবার্তায় পূর্ববঙ্গের কথ্যভাষাই ব্যবহার করতেন। তাঁর কৌতুকাভিনয়ের প্রাথমিক প্রেরণা ঢাকার গাড়োয়ানদের কাছে। শুধু কমেডিয়ান নয়, সফল চরিত্রাভিনেতা হিসাবেও তাঁর উচু দরের শিল্পী-পরিচয় পাওয়া যায় ‘নির্ধারিত শিল্পীর অনুপস্থিতিতে’, ‘টাকা আনা পাই, ‘দৰ্পচূৰ্ণ’ প্রভৃতি ছবিতে। তাঁকে কেন্দ্ৰ চরিত্র করে তাঁর নামে ছবি হয়েছে ‘ভানু পেল লটারী’, ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিসটেন্ট’। জীবনের শেষ দিকে নাটক ও চলচ্চিত্র ছাড়া যাত্ৰা জগতের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ঘটেছিল। তিনি একটি দলও পরিচালনা করতেন। অভিনেতৃসঙ্ঘের সভাপতি ছিলেন। ১৯৫৫ খ্রী. ‘চাটনী’ নামে তাঁর একটি রসরচনার বই বেরিয়েছিল।
পূর্ববর্তী:
« ভরতচন্দ্ৰ সিংহ
« ভরতচন্দ্ৰ সিংহ
পরবর্তী:
ভারতচন্দ্র রায়গুনাকর »
ভারতচন্দ্র রায়গুনাকর »
Leave a Reply