ভগবানচন্দ্ৰ বসু (আনুমানিক ১৮২৯ – ২-৮-১৮৯২) রাড়িখাল-বিক্রমপুর-ঢাকা। ১৮৪৮–৫২ খ্রী. ঢাকা কলেজের একজন নাম-করা ছাত্র ছিলেন। ১৮৫০–৫১ খ্রী তিনি ঢাকা কলেজ থেকে ‘লাইব্রেরী পদক’ লাভ করেন। ১৮৫২ খ্রী. কলেজ ছেড়ে শিক্ষকতা করতে থাকেন। ময়মনসিংহ স্কুলের হেডমাস্টার পদে থেকে ১৮৫৮ খ্রী. কৃতিত্বের সঙ্গে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাশ করেন। এই বছরই ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি ময়মনসিংহ জেলার ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হন। ১৮৮৪ খ্রী. সরকারী কাজ থেকে অবসর নেন। ফরিদপুরে চাকরিরত অবস্থায় জাতীয় মেলা সংগঠন করেন। এই মেলা নবগোপাল মিত্রের হিন্দু মেলার সঙ্গে সংযুক্ত না থাকলেও, জেলায় যথেষ্ট উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছিল। জাতীয় অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য নেপালের তরাই অঞ্চলে ও আসামে অনেক জমি কিনে বিদেশী একচেটিয়া চা-শিল্পে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। বর্ধমানে থাকার সময় শিল্প-বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে গ্ৰাম্যজীবনে শিল্প-চেতনা আনতে চেয়েছিলেন। এছাড়া বঙ্গদেশে চা-শিল্প ও বোম্বাইয়ে বস্ত্রশিল্পেও তিনি বহু অর্থ বিনিয়োগ করেন। নেপাল-তরাইয়ে চাষ-আবাদের জন্যও বিস্তর জমি কিনেছিলেন। নানা কারণে এইসব ব্যবসায়-প্ৰচেষ্টা বন্ধ হলে তিনি ঋণগ্ৰস্ত হয়ে পড়েন। এ ব্যাপারে তাঁর পুত্ৰ জগদ্বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক জগদীশচন্দ্ৰ বলেছিলেন, ‘এইসব ব্যর্থতার মধ্য দিয়েই ভবিষ্যৎ ভারত গড়ে উঠবে।’ নিষ্ঠাবান ব্ৰাহ্ম ও স্ত্রীশিক্ষানুরাগী ছিলেন। নিজ চার কন্যাকে উচ্চ শিক্ষা দিয়েছিলেন। ১৮৭৬ খ্রী. তিনি বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয়ে সক্রিয় সাহায্য দান করেছিলেন। ১-৮-১৮৭৯ খ্রী প্রতিষ্ঠিত ‘বঙ্গ মহিলা সমাজ’-এর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। আনন্দমোহন বসু তাঁর জামাতা।
পূর্ববর্তী:
« ভগবতী দেবী
« ভগবতী দেবী
পরবর্তী:
ভগৎবীর তামাঙ »
ভগৎবীর তামাঙ »
Leave a Reply