ব্ৰজেন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (২১-৯-১৮৯১ – ৩-১০-১৯৫২) বালি-হুগলী। উমেশচন্দ্ৰ। সেকেন্ড ক্লাশ পর্যন্ত পড়ে অর্থাভাবে পড়াশুনা বন্ধ করে কলিকাতায় আসেন। ১৯০৮–২৮ খ্ৰী. পর্যন্ত তিনি কলিকাতার বিভিন্ন অফিসে টাইপিস্ট ও পরে স্টেনোগ্রাফারের কাজ করেন। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যানুরাগী ছিলেন। নলিনীরঞ্জন পণ্ডিতের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে ১৩১৯ বা ‘জাহ্নবী’তে প্রথম রচনা প্রকাশ করেন-নাম ‘স্বপ্নভঙ্গ’। এরপর অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণের তত্ত্বাবধানে তিনি নবাবী আমলের ইতিহাস অবলম্বনে ১৩১৯ বা ‘বেগমস অফ বেঙ্গল’ গ্ৰন্থ রচনা করেন। ১৯২৯ খ্রী. ‘প্রবাসী’ ও ‘মডার্ন রিভিউ’ পত্রিকার সহ-সম্পাদক হন এবং বাংলা সংবাদপত্র ঘেঁটে সেকালের সাহিত্য ও সমাজজীবনের বিবরণ সংগ্ৰহ করেন। ‘সাহিত্য সাধক চরিতমালা’, ‘সংবাদপত্রে সেকালের কথা’, ‘বঙ্গীয় নাট্যশালার ইতিহাস’ তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গবেষণা-গ্ৰন্থ। যদুনাথ সরকারের কাছে তিনি বিজ্ঞানসম্মত প্ৰণালীতে ইতিহাস রচনার পদ্ধতি শিক্ষা করেন। রোগশষ্যায় বাংলা সাময়িক-পত্ৰ সংশোধন-সংযোজন শেষ করার দিনই মারা যান। বস্তুত ১৯শ শতাব্দীর সাময়িকপত্র থেকে আহৃত তথ্য সমাবেশে বঙ্গ-সংস্কৃতি, সমাজ ও সাহিত্যে নবজাগরণের ধারাবাহিক ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস রচনার বনিয়াদ গড়ে তুলেছেন তিনি। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের কর্মকর্তৃপদে অধিষ্ঠিত থাকা কালে তিনি তাঁর নবরূপায়ণে ও সুষ্ঠু পরিচালনায় বিশেষ সচেষ্ট ছিলেন। ক্যালকাটা হিস্টরিক্যাল সোসাইটির অনারারি মেম্বার এবং শশিশেখর, রাজশেখর ও গিরীন্দ্রশেখর বসুর উদ্যোগে সংগঠিত ‘উৎকেন্দ্ৰ সমিতি’র তিনি একজন উৎসাহী সদস্য ছিলেন। ১৩৪৩ ব. বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ তাকে ‘রামপ্ৰাণ গুপ্ত স্বর্ণপদক’ ও ১৯৫২ খ্রী. পশ্চিমবঙ্গ সরকার ‘রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করেন। রচিত ও সম্পাদিত গ্ৰন্থ-সংখ্যা ৩৩ (৪ টি ইংরেজী গ্ৰন্থসহ)। তাঁর মধ্যে ২৫ টি তাঁর ও সজনীকান্ত দাসের যুগ্ম-সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।
পূর্ববর্তী:
« ব্ৰজেন্দ্ৰকুমার সরকার
« ব্ৰজেন্দ্ৰকুমার সরকার
পরবর্তী:
ব্ৰজেন্দ্ৰলাল গঙ্গোপাধ্যায় »
ব্ৰজেন্দ্ৰলাল গঙ্গোপাধ্যায় »
Leave a Reply