বেণীমাধব দাস (২২-১১-১৮৬৬ – ২-৯-১৯৫২) সারোয়াতলী-চট্টগ্রাম। কৃষ্ণচন্দ্ৰ। শিক্ষাব্ৰতী। ১৮৯৪ খ্রী দর্শনশাস্ত্ৰে এম.এ. পাশ করে চট্টগ্রাম কলেজে যোগ দেন। দর্শন ও অর্থনীতি ছাড়াও ন্যায়শাস্ত্র এবং ইতিহাসও পড়াতেন। এ সময় কলেজিয়েট স্কুলটিকে সুষ্ঠুভাবে পুনর্গঠিত করে আদর্শ বিদ্যালয়ে পরিণত করেন। ছাত্রদের চরিত্র-গঠনে ও দেশপ্রেমে উদ্ধৃন্ধ-কারণে তাঁর অবদান অপরিসীম। আদর্শ শিক্ষক হিসাবে তাঁর খ্যাতি ছিল। চট্টগ্রাম, ঢাকা, কটক, কৃষ্ণনগর ও কলিকাতায় গভর্নমেন্ট কলেজের অধ্যাপকরূপে ও পরে গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রধানশিক্ষক-রূপে নিযুক্ত ছিলেন। উড়িষ্যা ও বাঙলার বহু খ্যাতনামা জ্ঞানীগুণী ব্যক্তি তাঁর ছাত্র। তাদের মধ্যে নেতাজী সুভাষচন্দ্ৰ বসু, বিখ্যাত যক্ষ্মারোগ-বিশেষজ্ঞ রাম অধিকারী, ডাকবিভাগের অধ্যক্ষ তপোগোপাল মুখার্জির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কটকে র্যাভেনশ কলেজিয়েট স্কুলে পড়ার সময় সুভাষচন্দ্ৰ তাঁর একান্ত প্রিয় ছাত্র ছিলেন। নেতাজী তাঁর ‘ভারত-পথিক’ গ্রন্থে লিখেছেন—’শিক্ষকদের মধ্যে একজনই মাত্র আমার মনে স্থায়ী ছাপ রেখে গেছেন—তিনি হলেন আমাদের প্রধানশিক্ষক শ্রদ্ধেয় বেণীমাধব দাস’। প্রথম যৌবনেই ব্ৰাহ্মধর্ম গ্ৰহণ করেন। তাঁর জীবনে ব্ৰহ্মানন্দ কেশবচন্দ্রের প্রভাব ছিল অপরিসীম। ব্ৰাহ্মসমাজের মুখপত্র ‘Indian Messenger ও ‘Nababidhan’ দীর্ঘদিন তাঁর পরিচালনায় ছিল। ১৯২৩ খ্রী. মাদ্রাজের কোকোনন্দ শহরে ‘All India Theistic Conference-এ সভাপতিত্ব করেন। তাঁর ঐ সভায় প্রদত্ত ভাষণটি ‘Modern Theistic Movement in India’ নামে পুস্তিকাকারে প্রকাশিত হয়। তাঁর প্রবন্ধ-সংকলন ‘Pilgrimage through Prayers’ উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ। তাঁর স্ত্রী (ব্রাহ্মসমাজের মধুসূদন সেনের কন্যা) সরলা দেবীর প্রতিটি সমাজসেবামূলক কাজে এবং দুঃস্থ অসহায়া নারীদের কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত ‘সরলা পুণ্যাশ্রম’ পরিচালনায় তিনি পরিপূর্ণ সহযোগিতা করতেন। বিপ্লবী বীণা দাস (ভৌমিক) ও কল্যাণী দাস (ভট্টাচাৰ্য) তাঁর কন্যাদ্বয়।
পূর্ববর্তী:
« বৃন্দাবন দাস, ঠাকুর
« বৃন্দাবন দাস, ঠাকুর
পরবর্তী:
বেণীমাধব বড়ুয়া »
বেণীমাধব বড়ুয়া »
Leave a Reply