বিভূতিভূষণ দাশগুপ্ত (১৫-১-১৯০৪ – ১৫-৪-১৯৭৫) গাউপাড়া-ঢাকা। পুরুলিয়ার বিখ্যাত নেতা ও ‘লোকসেবক সঙেঘ’র প্রতিষ্ঠাতা ঋষি নিবারণচন্দ্ৰ। পুরুলিয়া জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে কলিকাতার কলেজে পড়তে আসেন। এই সময় (১৯২১) গান্ধীজীর আহ্বানে তিনি কলেজ ত্যাগ করে অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন। ১৯২৪ খ্রী. তারকেশ্বরের মহান্তের দুনীতি ও স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের আহ্বানে যে সত্যাগ্ৰহ আন্দোলন শুরু হয় তাতে মানভূম জেলার সত্যাগ্রহীদের নেতৃত্ব করে তিনি সদলে কারাবরণ করেন। পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অল্পবয়স থেকেই ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সব রকমের আন্দোলনে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। রাজনৈতিক আদর্শের দিক দিয়ে গান্ধীবাদী হলেও বিগত দিনের সহিংস বিপ্লবীদের সঙ্গে তাঁর যথেষ্ট আত্মিক যোগ ছিল। তাঁর রচিত ‘সেই মহাবরষার রাঙা জল’ গ্রন্থটিতে তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়। রাজনৈতিক বন্দীরূপে বহুবার তিনি আটক ও অন্তরীণ থাকেন। ১৯৪৮ খ্রী. কংগ্রেস ত্যাগ করে ‘লোকসেবক সঙ্ঘ’ প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অংশ গ্রহণ করেন এবং সঙেঘর প্রধান সচিব হন (১৪৭৬-১৯৪৮)। বিহার-রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত বাঙালী-প্রধান পুরুলিয়ার পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তির আন্দোলনে অন্যতম পুরোধা ছিলেন। এই আন্দোলনের ফলেই পুরুলিয়ার প্ৰতিনিধিরূপে লোকসেবক সঙেঘর প্রার্থী হিসাবে তিনি ১৯৫৭ খ্রী. ভারতের লোকসভায় সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬১ খ্ৰী. পুরুলিয়া নির্বাচনকেন্দ্র থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হন। ১৯৬৭ খ্রী. ও ১৯৬৯ খ্রী. যুক্তফ্রন্ট সরকারের আমলে তিনি যথাক্রমে পঞ্চায়েত তথা সমাজ কল্যাণ দপ্তরের ও পঞ্চায়েত দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। পুরুলিয়া থেকে প্রকাশিত পিতৃ-প্রতিষ্ঠিত সাপ্তাহিক ‘মুক্তি’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। পশ্চিম বাঙলার, বিশেষত পুরুলিয়ার বহু গঠনমূলক কাজের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সংযোগ ছিল। অকৃতদার বিভূতিভূষণ পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও হানাহানি অবসানের জন্য নানাভাবে চেষ্টা করে গেছেন।
পূর্ববর্তী:
« বিভূতিচন্দ্ৰ
« বিভূতিচন্দ্ৰ
পরবর্তী:
বিভূতিভূষণ দাস »
বিভূতিভূষণ দাস »
Leave a Reply