বিপদবারণ সরকার (১৮৮৫ – ১৯৮০) হবিবপুর-বরিশাল। কৈলাসচন্দ্র। ১৯০৯ খ্রী. বরিশালের বানারীপাড়া স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, ১৯১১ খ্রী. বরিশালের বিএম কলেজ থেকে এফ.এ. ও ১৯১৩ খ্রী. ঢাকা কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করে শিক্ষকতা কাজের সঙ্গে ১৯১৭ খ্রী. বাঁশের টিউবওয়েল প্ৰস্তুত করার কাজ শুরু করেন। ১৯২১ খ্রী. অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়ে ঢাকা বিক্রমপুর স্কুলের সহ-প্রধান শিক্ষকের পদ ত্যাগ করেন। বিক্রমপুরের দীঘিরপার জাতীয় বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার কালে ঢেঁকি-পদ্ধতিতে (স্লোজার সিস্টেম) টিউবওয়েল পোঁতার পদ্ধতির উন্নয়ন বিষয়ে সচেষ্ট হন এবং আরও গবেষণার সুবিধার্থ ১৯২৩ খ্রী. কলিকাতায় আসেন। তাঁর গ্রামবাসী ডাঃ নিশিকান্ত বসুর মাধ্যমে তিনি কার্তিক বসু, মদনমোহন বর্মণ, আচার্য প্ৰফুল্লচন্দ্র রায় প্রমুখের সঙ্গে পরিচিত হয়ে বাঁশের টিউবওয়েল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকেন। গবেষণার ফলস্বরূপ ১৯২৬ খ্রী. ‘দশভুজা জলদূত’ নামে একটি কোম্পানী প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে কর্মীদের বিনাবেতনে বাঁশের টিউবওয়েল পোঁতার কৌশল শিক্ষা দেওয়া হত। ১৯৩৬ খ্ৰী. মেদিনীপুরের বালিচকে প্রথম ফিল্টার-বর্জিত টিউবওয়েল পোতা হয়। এর সাফল্যে বিভিন্ন জেলা থেকে টিউবওয়েলের অর্ডার আসতে থাকে। এ ছাড়া তিনি ‘Force Stick Pump’, ‘valveless Pump’, ‘Suction Stick Pump’, ‘Sand Accumulator’, ‘পিস্টন-বর্জিত পাম্প’, বন্যা নিয়ন্ত্রণে ‘সোক-ওয়েল’ (soak wel)-এর ব্যবহার এবং জলশক্তির জন্য সাইফনের ব্যবহার প্রভৃতি উদ্ভাবন করেন। তাঁর গবেষণালব্ধ পদ্ধতির প্রয়োগ করে ‘পাইওনীয়র টিউবওয়েল কোম্পানী’ সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু চরম দারিদ্র্যের মধ্যে তাঁর দিন কেটেছে। তিনি বলতেন, ‘I am purely a research worker, not a businessman’। ১৯৫২ খ্রী. একমাত্র পুত্রের মৃত্যুর পর ১৯৫৯ খ্রী. থেকে উদ্বাস্তু কলোনীতে সরকারের সামান্য পেনসনের টাকায় তাঁর জীবন নির্বাহ হত।
পূর্ববর্তী:
« বিনয়েন্দ্রনাথ সেন
« বিনয়েন্দ্রনাথ সেন
পরবর্তী:
বিপাশা হায়াত »
বিপাশা হায়াত »
Leave a Reply