বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় (১৯০৪ – ১৯-১১-১৯৮০) বেহালা-কলিকাতা। বিপিনবিহারী। প্ৰখ্যাত চিত্রশিল্পী। ১৯১৭ খ্রী. শান্তিনিকেতনে পড়তে যান। ১৯১৯ খ্রী. কলাভবনে ভর্তি হন। অবনীন্দ্রনাথ-নন্দলালের প্রিয়শিষ্য ছিলেন। ১৯২৫ খ্রী. কলাভবনের শিক্ষক এবং সেই সঙ্গে এখানের ছোট মিউজিয়ামের কিউরেটর ও লাইব্রেরিয়ান হন। টেমপেরা তাঁর প্রিয় মাধ্যম হলেও তেল রং ও মুরালেও দক্ষতা ছিল। ১৯৩৭–৩৮ খ্রী. জাপান ভ্ৰমণ করেন। ভারতীয় শিল্পকলায় জাপানী ভাবধারা আনয়নে তিনি পথিকৃৎ। তাঁর শিল্পপ্রতিভার কিছু নিদর্শন আছে শান্তিনিকেতনের কলাভবন ও হিন্দীভবনের ফ্রেস্কোগুলিতে। ১৯৪৯ খ্রী কলাভবন ছেড়ে নেপাল সরকারের অনুরোধে ঐ দেশের শিক্ষাবিভাগের উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়ে কাঠমাণ্ডু যান। নেপালের সরকারী মিউজিয়মের কিউরেটরও ছিলেন। ১৯৫১–৫২ খ্রী. মুসৌরিতে একটি শিল্পশিক্ষাকেন্দ্র ও শিশুশিক্ষা নিকেতন গড়ে ওখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসায় ১৯৫৬ খ্ৰী. চিকিৎসার জন্য অপারেশন করিয়ে সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন হয়ে যান। ১৯৫৮ খ্রী. আবার কলাভবনে ফিরে আসেন। এখানে কিছুদিন অধ্যাপনা করার পর অধ্যক্ষ পদে বৃত হন। ১৯৭৩ খ্রী. এমেরিটাস অধ্যাপক হিসাবে কিছু দিন কলাভবনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অন্ধ হওয়ার পরও ছবি এঁকেছেন, ভাস্কৰ্য, কাগজ কেটে ছবি বসানো এবং টালি দিয়ে মুরালের কাজ করেছেন অনেক। শেষ জীবনে সম্পূর্ণ নিৰ্জনবাস করেছেন। চিত্র-সমালোচক এবং লেখক হিসাবেও খ্যাতি ছিল। তাঁর ‘চিত্রকর’ গ্রন্থের জন্য দশ হাজার টাকা পুরস্কার পান। ‘কর্তবাবা’ তাঁর আত্মজীবনীমূলক রচনা। ‘পদ্মভূষণ’ (১৯৭৪) ও বিশ্বভারতীর ‘দেশিকোত্তম’ উপাধিতে ভূষিত ছিলেন। কার্টুনিস্ট, ডাক্তার বনবিহারী তাঁর অগ্ৰজ।
পূর্ববর্তী:
« বিনোদচন্দ্ৰ চক্রবর্তী
« বিনোদচন্দ্ৰ চক্রবর্তী
পরবর্তী:
বিনোদিনী দাসী »
বিনোদিনী দাসী »
Leave a Reply