বিনয় ঘোষ (১৪-৬-১৯১৭ – ২৪/২৫-৭-১৯৮০) গোড়াপাড়া—যশোহর। বিশ্বেশ্বর। কলিকাতায় জন্ম। বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী, সাহিত্য-সমালোচক এবং বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি—বিশেষত লোক সংস্কৃতির গবেষক। ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পৰ্কীয় পর্যালোচনায়ও বিশেষ কৃতিত্বের অধিকারী। তাঁর রচনায় ১৯শ শতকের বাংলা ও বাংলার নবজাগরণের ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা যেমন স্থান পেয়েছে, তেমনি ‘সোভিয়েট সভ্যতা’ও বাংলার সাহিত্য সম্ভারকে পরিপুষ্ট করেছে। কলিকাতাকে ইতিহাসের আলোকে নূতন রূপ দিয়ে, নূতন ব্যাখ্যা দিয়ে তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে বাংলার লোকশিল্পের সমাজতত্ত্ব ও তাঁর রচনায় সন্নিবিষ্ট হয়েছে। আশুতোষ কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করেন। সাংবাদিকতায় তাঁর কর্মজীবনের সূচনা। ফরওয়ার্ড, সাপ্তাহিক অরণি, দৈনিক বসুমতী, যুগান্তর প্রভৃতি বহু পত্র-পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেছেন। ভারতীয় গণনাট্য সঙেঘ তাঁর লেখা ‘ল্যাবরেটরি’ নাটক অভিনীত হয়েছে এবং তিনি এই সঙ্ঘের গানের দলের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন। সে সময় কয়েকটি রাজনৈতিক বইও তিনি লেখেন—‘আন্তর্জাতিক রাজনীতি’, ‘সোভিয়েত সভ্যতা’, ১ম ও ২য়, ‘ফ্যাসিজম ও জনযুদ্ধ’, ‘সোভিয়েট সমাজ ও সংস্কৃতি’ প্রভৃতি। পরে রাজনীতি থেকে সরে এসে সম্পূর্ণ সাহিত্য-চৰ্চায় মনোযোগী হন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বিদ্যাসাগর বক্তৃতামোলা’র তিনিই প্রথম বক্তা। ১৯৫৮–৬০ খ্রী. ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের রকফেলার রিসার্চ স্কলার ছিলেন। ১৯৫৯ খ্রী. ‘পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি’ গ্রন্থের জন্য তিনি ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ লাভ করেন। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ : ‘বিদ্যাসাগর ও বাঙালী সমাজ’ ৪ খণ্ড, ‘সাময়িকপত্রে বাংলার সমাজচিত্র’, ‘বাংলার বিদ্বৎসমাজ’, ‘বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা ১৮০০–১৯০০’, ‘কলকাতা শহরের ইতিবৃত্ত’, ‘মেট্রোপলিস মন, মধ্যবিত্ত ও বিদ্রোহ’, ‘জনসভার সাহিত্য’, ‘কালপেঁচার নকসা’, ‘নববাবুরচিত’ প্রভৃতি। ‘ডাস্টবিন’ তাঁর ছোটগল্পের সংকলন। ‘৩০৪’ নামে একটি উপন্যাসও লেখেন।
পূর্ববর্তী:
« বিন্দুবাসিনী
« বিন্দুবাসিনী
পরবর্তী:
বিনয়কুমার দাস »
বিনয়কুমার দাস »
Leave a Reply