বিধুশেখর ভট্টাচাৰ্য শাস্ত্রী, মহামহোপাধ্যায় (১২৮৫ – ১৩৬৪ ব) হরিশ্চন্দ্রপুর-মালদহ। ত্ৰৈলোক্যনাথ। টোলের ছাত্র হিসাবে শিক্ষা শুরু করে ১৭ বছর বয়সে ‘কাব্যতীর্থ’ হন। এই সময়ে ২ টি কাব্য-গ্ৰন্থ রচনা করেন। কাশীতে দর্শনশাস্ত্ৰ অধ্যয়নের সময়ও তাঁর কাব্যরচনা অব্যাহত ছিল। সেখানে মহামহোপাধ্যায় কৈলাসচন্দ্ৰ শিরোমণির নিকট ন্যায়শাস্ত্র এবং মহামহোপাধ্যায় সুব্রহ্মণ্য শাস্ত্রীর নিকট বেদান্তশাস্ত্ৰ অধ্যয়ন শেষ করে ‘শাস্ত্রী’ উপাধি লাভ করেন। ১৩১১ ব. মাঘ মাসে শান্তিনিকেতনে যোগ দেন এবং একাদিক্ৰমে ৩০ বৎসরকাল বিশ্বভারতীতে অধ্যাপনা করেন। এরপর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং সংস্কৃত বিভাগের অধ্যক্ষ তথা ‘আশুতোষ অধ্যাপক’ পদে নিযুক্ত হন। এ সময়ে তাঁর প্রচেষ্টায় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত পুথিবিভাগ, তিব্বতী ও চীনা শাস্ত্ৰ বিভাগ এবং আশুতোষ সংস্কৃত গ্ৰন্থমালা সমৃদ্ধি লাভ করে। রবীন্দ্রনাথের প্রেরণায় তিনি বৌদ্ধশাস্ত্র ও পালি ভাষার চর্চায় ব্ৰতী হন। বৌদ্ধশাস্ত্ৰ পৰ্যালোচনার জন্য ফরাসী, জার্মান, তিববতী, চীনা ও ইংরেজী ভাষা অধ্যয়ন করেন। তাঁর রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭ টি। তাঁর মধ্যে ৩ টি ইংরেজী ভাষায়। গ্রন্থগুলিতে ন্যায়, দর্শন, ব্যাকরণ, শব্দকোষ, পালি, বৌদ্ধধর্ম-পরিচয় প্রভৃতি নানা বিচিত্র বিষয়ের সমাবেশ আছে। তিব্বতী অনুবাদ থেকে লুপ্ত সংস্কৃত মূলগ্রন্থের পুনরুদ্ধারের তিনি পথ-প্ৰদৰ্শক। তাঁর রচিত ও সম্পাদিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : ‘মধ্যান্তবিভাগসূত্ৰভাষ্যটীকা’, ‘ন্যায়প্রবেশ’, ‘মিলিন্দ পণহ’, ‘উপনিষৎ’ (বিশ্ববিদ্যাসংগ্ৰহমালা), ‘Historical introduction to the Indian Schools of Buddhism’, ‘পালি প্রবেশ’, ‘ভোটপ্রকাশ’, তিব্বতী পাঠ সহ বোধিচর্যাবতার তথা নাগানন্দ নাটক ইত্যাদি। ১৯৩৬ খ্রী. তিনি ‘মহামহোপাধ্যায়’ উপাধি পান। পরে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডি,লিট, এবং ১৯৫৭ খ্রী. বিশ্বভারতী ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি দেয়।
পূর্ববর্তী:
« বিধুভূষণ সেনগুপ্ত
« বিধুভূষণ সেনগুপ্ত
পরবর্তী:
বিনোদ গোস্বামী »
বিনোদ গোস্বামী »
Leave a Reply