বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী (২-৮-১৮৪১ – ১৮৯৯)। শান্তিপুর-নদীয়া। আনন্দকিশোর প্রসিদ্ধ অদ্বৈতাচার্যের বংশধর। শান্তিপুরে গোবিন্দ অধিকারীর টোলে অধ্যয়ন শেষ করে ১৮ বছর বয়সে কলিকাতার সংস্কৃত কলেজে বেদান্ত পাঠে ব্ৰতী হয়ে প্রচলিত হিন্দুধর্ম সম্বন্ধে তাঁর অনাস্থা জন্মে। তখন তিনি কৌলিক ব্যবসায় ত্যাগ করে জীবিকা-সংস্থানের আশায় মেডিক্যাল কলেজের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ফাইনাল পরীক্ষার আগের বছর। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলা বিভাগের কিছু ছাত্রের বিবাদ শুরু হলে তিনি এবং আরও কিছু ছাত্র কলেজ ছেড়ে দেন। কলেজে পড়বার সময় থেকেই ব্ৰাহ্মধর্মের প্ৰতি আকৃষ্ট হন। এই সময়ে জাতিভেদের বিরোধিতা করে উপবীত ত্যাগ করেন এবং দেবেন্দ্রনাথের কাছ থেকে দীক্ষা নিয়ে ব্ৰাহ্মসমাজভুক্ত হন। সংস্কৃত কলেজে পড়ার সময় যোগমায়া দেবীকে বিবাহ করেন। ১২৭০ ব: প্রথম ব্ৰাহ্মসমাজের আচার্য পদ পেয়ে পূর্ববঙ্গে যান। ঢাকাতে কিছুদিন প্রচারক, আচার্য ও পরে কেশবচন্দ্রের সহযোগী হিসাবে কাজ করেন। শান্তিপুর, ময়মনসিংহ, গয়া প্ৰভৃতি অঞ্চলে ব্ৰাহ্মমন্দির প্রতিষ্ঠায় তিনি প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন। ব্ৰাহ্মসমাজের প্রথম দুটি গানের তিনিই রচয়িতা। গয়াতে থাকাকালে যোগসাধনায় প্রবৃত্ত হন এবং যোগগুরুর কথা অনুসারে যোগসাধনে দীক্ষাদান শুরু করেন। ফলে ব্ৰাহ্মসমাজের সঙ্গে তাঁর বিবাদ হয় এবং তিনি ব্ৰাহ্মসমাজ ত্যাগ করে ১২৯৩ বা পুনরায় হিন্দুধর্ম ও উপবীত গ্রহণ করেন। এরপর ঢাকার গেন্ডোরিয়া অঞ্চলে আশ্রম প্ৰতিষ্ঠা করে ধর্মসাধনায় রত থাকেন। শেষ-জীবনে হরিভক্ত বৈষ্ণব হন। কলিকাতা, পুরী প্রভৃতি অঞ্চলে বহু লোককে দীক্ষাদান করেছিলেন। যোগসাধন-বিষয়ক তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম ‘প্রশ্নোত্তর’। নীলাচলে মৃত্যু।
পূর্ববর্তী:
« বিজয়কৃষ্ণ আচাৰ্য
« বিজয়কৃষ্ণ আচাৰ্য
পরবর্তী:
বিজয়কৃষ্ণ ভট্টাচার্য »
বিজয়কৃষ্ণ ভট্টাচার্য »
Leave a Reply