বনবিহারী মুখোপাধ্যায়, ডাঃ (১৮৮৫ – ৫-৭-১৯৬৫) বিপিনবিহারী। দরদী চিকিৎসক, ব্যঙ্গ-সাহিত্যস্রষ্টা ও ব্যঙ্গচিত্রাঙ্কনশিল্পী। মেডিক্যাল কলেজে অধ্যাপনাকালে সাহিত্যিক ‘বনফুল’ তাঁর ছাত্র ছিলেন। সাহিত্য-সাধনায় অন্যতম প্রেরণাদাতা এই মাস্টারমশায়ের জীবন ভিত্তি করে পরবর্তীকালে বনফুল ‘অগ্নিশ্বর’ উপন্যাস রচনা করেছিলেন। ‘বঙ্গবাণী’ ‘শনিবারের চিঠি’ প্ৰভৃতিতে তিনি লিখতেন। ‘বেপরোয়া’ নামে তাদের একটি দল ছিল। দলের অন্যতম সভ্য বিষ্ণুচরণ ভট্টাচার্যের সম্পাদনায় ১৯২৩ খ্রী. ‘বেপরোয়া’ নামে যে পত্রিকা প্রকাশিত হয়, তাঁর বেশির ভাগ লেখাই তিনি লিখতেন। তাঁর গল্প, উপন্যাস, নাটকের যে ভাবসঙ্ঘাত, তা বেশির ভাগই শ্লেষ ও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মধ্যে ফুটে উঠলেও তাতে ব্যক্তিগত জ্বালা ছিল না। তাঁর ব্যঙ্গের আক্রমণ ছিল সমাজধর্মের মধ্যে যে অন্ধতা আছে, শুধু তাঁর বিরুদ্ধে। সে যুগে বাঙলা দেশে শক্তিশালী কার্টুনিস্ট হিসাবে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তাঁর নামই বিশেষ উল্লেখযোগ্য। নিজের রচনা তিনি হাসির ছবি দিয়ে নিজেই সাজাতেন। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘দেবী চৌধুরানী’ অবলম্বনে ‘ঢেলে সাজা’ নাম দিয়ে কার্টুনের সহযোগিতায় তাঁর প্যারডি তৎকালে বিশেষ উপভোগ্য হয়েছিল। তাঁর ব্যঙ্গ কবিতা ও কার্টুন ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্ৰকাশিত হত। রচিত উপন্যাস : ‘দশচক্ৰ’, ‘যোগভ্ৰষ্ট’ প্রভৃতি। ‘সিরাজের পেয়ালা ও ‘নরকের কীট’ তাঁর উল্লেখযোগ্য গল্প। তিনি তাঁর বিধবা ভগিনীর পুনর্বিবাহ দিয়েছিলেন এবং ঐ বিবাহে বিচারপতি আশুতোষ মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। শিল্পী বিনোদবিহারী তাঁর অনুজ।
পূর্ববর্তী:
« বনবিহারিণী (ভূণি)
« বনবিহারিণী (ভূণি)
পরবর্তী:
বনলতা দাশগুপ্ত, নীনা »
বনলতা দাশগুপ্ত, নীনা »
Leave a Reply