ফণীন্দ্রনাথ শেঠ (১৮৯৩ – ২৫-১১-১৯৭১) কলিকাতা বিডন স্ট্রীটের বিখ্যাত শেঠ পরিবারে জন্ম। হাইকোর্টের ব্যবহারজীবি রাজেন্দ্রনাথ। ভারতে দশমীকরণ আন্দোলনের প্রধানতম উদ্যোক্তা। কলেজে। পড়ার সময়ই তিনি এদেশে দশমিক পদ্ধতি চালু করার কল্পনা করেন। দীর্ঘদিনের চেষ্টায় ১৯৪৪ খ্রী. ‘ভারতীয় দশমিক সমিতি’ নামে সংস্থা গঠন ও পরিচালনা করে তার মাধ্যমে ভারত সরকারের সঙ্গে পত্ৰাদি বিনিময় করে তা প্রবর্তনে সমর্থ হন। সরকারের নথীপত্রে তাঁর অবদান স্বীকৃত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মেট্রিক প্রথা প্রচার উপদেষ্টা কমিটির একমাত্র বেসরকারী সদস্য ছিলেন। ‘মেট্রিক পদ্ধতি’ নামে রাজ্য সরকারের পত্রিকার সম্পাদক মণ্ডলীর অন্যতম হিসাবে কাজ করেছেন। এ সম্পর্কে তাঁর বহু মূল্যবান প্ৰবন্ধ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্ৰকাশিত হয়েছে। ‘প্ৰথম পাঠ্য দশমিক ধারাপাত’ তাঁর লিখিত বহু প্ৰশংসিত পুস্তক। কলিকাতার নতুন বাজারে ‘মেট্রিক শিক্ষালয়’ নামে একটি স্কুল চালাতেন। আরও একটি সর্বভারতীয় আন্দোলনে তাঁর উদ্যম স্মরণীয়। ১৯৪৫ খ্রী. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়কে সভাপতি করে এবং নিজে সম্পাদকের দায়িত্ব ভার নিয়ে ‘রোমক লিপি সমিতি’ গড়ে তোলেন। উদ্দেশ্য-বহু ভাষার দেশ ভারতবর্ষে একমাত্র রোমান হরফ চালু করা—তবে সংশোধিত আকারে। অনুশীলন সমিতির সভ্য ছিলেন। স্কটিশচার্চ কলেজে বি.এ. পড়ার সময় ১৯১৬ খ্রী. গ্রেপ্তার হয়ে দু বছর কারাদণ্ড ভোগ করেন। কারামুক্তির পর পারিবারিক দায়িত্বের চাপে পড়া ছেড়ে ব্যবসায় মন দেন। এক সময় কংগ্রেসের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরে বিশেষ এক প্ৰশ্নকে কেন্দ্ৰ করে মতান্তর হওয়ায় পদত্যাগ করেন। জাতিভেদ ও ধর্মের গোড়ামির বিরুদ্ধে তাকে বহুবার দাঁড়াতে দেখা গেছে। অসবর্ণ বিবাহের একজন সমর্থক ও প্রবক্তা ছিলেন। কিছুদিন আৰ্যসমাজভুক্ত থেকে পরে সেখান থেকে সরে আসেন। বৈদিক ধর্মে বিশ্বাসী নিরীশ্বরবাদী তিনি নিজের জীবনে সে আদর্শ পালন করতেন।
পূর্ববর্তী:
« ফণীন্দ্রনাথ বসু রায়চৌধুরী
« ফণীন্দ্রনাথ বসু রায়চৌধুরী
পরবর্তী:
ফণীন্দ্ৰকৃষ্ণ গুপ্ত »
ফণীন্দ্ৰকৃষ্ণ গুপ্ত »
Leave a Reply