ফণীন্দ্ৰনাথ মুখোপাধ্যায় (১-১০-১৮৯৭ – ১২-৪-১৯৮১)। আগরপাড়া-২৪ পরগনা। খ্যাতনামা সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও সমাজকল্যাণব্ৰতী। নিজে কোন সাহিত্য সৃষ্টি করেন নি-কিন্তু বাংলাদেশের বহু খ্যাতিমান সাহিত্যিকের সাহিত্য সৃষ্টির পথ তিনি প্রশস্ত করেছেন। অধুনা লুপ্ত মাসিক ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকার সম্পাদক হিসাবেই তাঁর বিশেষ পরিচিতি। দারিদ্র্য ও সাংসারিক বিপর্যয়ের বাধা অতিক্রম করে পড়াশুনা করেছেন। ১৯১৮ খ্রী. সংস্কৃতে অনার্স সহ বি.এ. পাশ করে অর্থোপার্জনের প্রয়োজনে তাঁর সাংবাদিক জীবন আরম্ভ হয়। ছাত্রাবস্থায় বিপ্লবী বিপিনবিহারী গাঙ্গুলীর অনুগামী ছিলেন। ১৯২০–২৭ খ্রী.’দৈনিক বসুমতী’ পত্রিকায় কাজ করেন। ইতিমধ্যে ১৯২১ খ্রী. বাংলা সাহিত্যে এম.এ. পাশ করেন এবং অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়ে গ্রেপ্তার হন। ১৯২৫ খ্রী. গান্ধীজীর তৎকালীন পূর্ববঙ্গ সফরকালে দোভাষী হিসাবে তিনি তাঁর সঙ্গী হন। ১৯২৭ খ্রী. সুভাষচন্দ্রের ‘বাংলার কথা’ দৈনিক পত্রের বার্তা-সম্পাদকরূপে যোগ দেন। ১৯৩০ খ্রী. পত্রিকাটি ‘বঙ্গবাণী’তে রূপান্তরিত হয়। এখানে তিনি ১৯৩১ খ্রী. পর্যন্ত থাকেন। ১৯৩২ খ্রী. ‘সাহিত্যবাসর’ পত্রিকার সম্পাদক হবার আগে কিছুদিন ’দৈনিক হিতবাদী’-তে কাজ করেছেন। ১৯৩৪ খ্রী. সম্পাদক জলধর সেনের সহকারীরূপে ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকায় যোগ দেন এবং তাঁর মৃত্যুর পর ১৯৩৯ খ্রী. তিনি ঐ পত্রিকার সম্পাদক হয়ে প্রায় ৩৫ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪২ খ্রী. ‘ভারত-ছাড়’ আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৪৬ খ্রী. ব্যারাকপুর কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। ১৯৫২ খ্রী. পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভায় নির্বাচিত হন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে পি.এইচ.ডি. গবেষণা পত্রের পরীক্ষক নিযুক্ত করে। নবদ্বীপের পণ্ডিত সমাজ কর্তৃক ‘ভারতীরঞ্জন’ উপাধি লাভ করেন। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, ইন্ডিয়ান জানালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও অন্যান্য বহু প্ৰতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আদর্শ চরিত্র সেবাকর্মী হিসাবেও তাঁর খ্যাতি ছিল। উত্তরবঙ্গে প্ৰলয়ঙ্কর বন্যায় তাঁর সেবাকাৰ্য আচার্য প্ৰফুল্লচন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।
পূর্ববর্তী:
« ফণীন্দ্ৰনাথ চক্রবর্তী
« ফণীন্দ্ৰনাথ চক্রবর্তী
পরবর্তী:
ফণীশ্বরনাথ রেণু »
ফণীশ্বরনাথ রেণু »
Leave a Reply