ফণিভূষণ মজুমদার (১৯০২ – ৩১-১০-১৯৮১) সেনদিয়া-ফরিদপুর। সতীশচন্দ্ৰ। মাদারীপুর স্কুলে পড়ার সময়ই হেমচন্দ্ৰ ঘোষ, পঞ্চানন চক্রবর্তী প্রমুখ নয় বন্ধু মিলে বিপ্লবমুখী দল গড়ে তোলেন। বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করে কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। ১৯২৮ খ্ৰী. দক্ষিণ কলিকাতা অঞ্চলে মাদারীপুর দলের চিত্ত বসু, অমলেন্দু দাশগুপ্ত, জনাৰ্দন চক্রবর্তী ও তিনি একটি শক্তিশালী বিপ্লবী ঘাঁটি গড়ে তোলেন। ঐ বছর কংগ্রেস অধিবেশনের শেষে অনুশীলন ও যুগান্তর দলের পুরান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যে অংশ বিদ্রোহ করে-সেই ‘রিভোল্ট’ দলে তিনিও ছিলেন। ১৮৩০ খ্ৰী. চট্টগ্রাম সশস্ত্ৰ অভ্যুত্থানের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি গ্রেপ্তার হয়ে আট বছর কারারুদ্ধ থাকেন। ত্রিপুরী কংগ্রেসের পর কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত সুভাষচন্দ্র রামগড়ে যে আপোষবিরোধী সম্মেলন করেন তাঁর সংগঠনে ও সাফল্য অর্জনে তাঁর বিশিষ্ট ভূমিকা ছিল। ফরওয়ার্ড ব্লক প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি তাঁর অন্যতম সম্পাদক হন। ১৯৪০ খ্রী হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণ আন্দোলনে সুভাষচন্দ্রের সঙ্গে কারাবরণ করেন। ১৯৪৬ খ্ৰী. মুক্তি পেয়ে সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা উদ্ভবে সম্প্রীতি রক্ষার কাজে মাদারীপুরে যান। দেশ বিভাগের পর পূর্ব-পাকিস্তানে থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন পরিচালনা করতে থাকেন। ১৯৫৩ খ্রী. আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং আমরণ দলের সভাপতি-মণ্ডলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৭১ খ্রী পূর্ববঙ্গের মুক্তি-সংগ্রামে ফরিদপুর-যশোহর-বরিশাল সেক্টরের মুক্তিফৌজের তিনি ছিলেন প্ৰধান। স্বাধীন বাংলাদেশে মুজিব মন্ত্রিসভায় ১৯৭১-৭৪ খ্রী. খাদ্যমন্ত্রী ও ১৯৭৫ খ্ৰী. পুনর্গঠিত মন্ত্রিসভায় ভূমি প্রশাসন, স্বায়ত্তশাসন, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। ১৪-৮-১৯৭৫ খ্রী. সপরিবারে মুজিব নিহত হওয়ার পরদিনই অসুস্থ অবস্থার মধ্যেই তাকে হাতকড়া লাগিয়ে বন্দী করা হলেও অজ্ঞাতকারণে তাঁর প্রাণ রক্ষা হয়। ১৯৭৯ খ্রী. আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসাবে সংসদ নির্বাচনে জয়ী হন। জীবনের ৩২ বছর তাঁর কারাগারে কেটেছে।
পূর্ববর্তী:
« ফণিভূষণ বিদ্যাবিনোদ
« ফণিভূষণ বিদ্যাবিনোদ
পরবর্তী:
ফণিভূষণ মতিলাল, ছোট ফণী »
ফণিভূষণ মতিলাল, ছোট ফণী »
Leave a Reply